পিরোজপুরে পাওনা টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা

শেয়ার করুনঃ

পিরোজপুর থেকে মো: শাহজাহান :: পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানী উপজেলায় পাওনা টাকা আদায় করতে ব্যর্থ হয়ে শেফালী রানী নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। শেফালী রানী (৪২) উপজেলার ৬নং ওয়ার্ড রামচন্দ্রপুর গ্রামের শংকর চন্দ্র শীলের স্ত্রী। এ ঘটনায় পিরোজপুর সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে।

জানা গেছে, গত ১৭ অক্টোবর সকাল ১০টার দিকে ওই গৃহবধূ একই এলাকার দুলাল হাওলাদারের নিকট পাওনা ১ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা চাইতে যায়। দুলাল ওই একই এলাকা রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত. জুলফিকার আলী হাওলাদারের পুত্র। সে ইতোপূর্বে শেফালীর নিকট থেকে ২ কাঠা জমি বিক্রয়ের কথা বলে ৩৮ হাজার টাকা, জমি বন্ধক বাবদ ২৬ হাজার টাকা, ধার বাবদ ৪৩ হাজার টাকা, এনজিও থেকে লোন উঠিয়ে দেওয়া বাবদ ৪০ হাজার টাকা গ্রহণ করে।

শেফালী রানী মঠবাড়িয়া উপজেলার দক্ষিণ মিঠাখালী গ্রামের মৃত. অরুণ চন্দ্র শীলের ছোট মেয়ে। তার স্বামী শংকর চন্দ্র শীল মঠবাড়িয়ায় রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। স্বামীর অনুপস্থিতে সুচতুর দুলাল কৌশলে শেফালীর সাথে ধর্ম বোনের সম্পর্ক তৈরি করে বিভিন্ন সময় উক্ত টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বিশ্বস্ততার ভান করে নগদ গ্রহণ করে। একপর্যায়ে সন্দেহ হলে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য জোর তাগিদ দেওয়া শুরু করলে দুলাল টাল বাহানা শুরু করে।

ঘটনার তারিখ ও সময় অর্থাৎ ওই ১৭ অক্টোবর ওয়াদা মত টাকা চাইতে গেলে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করে। স্বামীর পরিশ্রমের গচ্ছিত টাকা ধার দিয়ে আদায় করতে ব্যর্থ হয়ে স্বামীর নিকট জবাবদিহীতা, লোক লজ্জার ভয় ও টাকার শোকে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যার উদ্দেশ্যে চালের পোকা দমনের ঔষুধ সেবন। খবর পেয়ে প্রতারক দুলাল তাকে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। কোন ওয়াশ না করে হাসপাতালে ভর্তি করার ১২ ঘন্টা পর মারা যাওয়ার বিষয়টি মৃতের পরিবারকে হাসপাতাল সূত্রে নিশ্চিত করেন।

এদিকে দুলাল চালের পোকা দমনের ঔষুধ সেবনের বিষয়টিকে গোপন রেখে ডায়রিয়ায় মারা যাওয়ার গুজব ছড়াতে থাকে। মঠবাড়িয়ায় থাকা স্বামী শংকর চন্দ্র শীল ও শেফালীর আপন ভাই সত্য মিস্ত্রীকে মোবাইলে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে বলে অবগত করে এবং সাথে থাকা মৃতের শ্বাশুরী ও বি.এ অনার্স পড়–য়া মেয়ে শান্তি রানীকে ওষুধ সেবনের বিষয়টি গোপন রাখার জন্য অনুরোধ করে। এমনকি নিজে নিরাপদ থাকার জন্য ওয়াশ না করিয়ে হাসপাতালে ভর্তি রাখে। দুলালের প্রতারণা ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার বিষয়টি প্রশাসনসহ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দ্রæত আত্ম গোপনে চলে যায়।

এ ব্যাপারে ইন্দুরকানী থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবীর জানান, পিরোজপুর সদর হাসপাতালে মারা যাওয়ায় পিরোজপুর সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।