ওসির মানবিকতায় স্বজনদের কাছে ফিরল স্মৃতি হারানো কিশোরী

শেয়ার করুনঃ

অনলাইন ডেস্ক :: পাবনার ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আনোয়ার হোসেনের মানবিকতায় মানসিক ভারসাম্যহীন এক কিশোরী তার স্বজনদের কাছে ফিরল।

সোমবার (২৬ অক্টোবর) রাতে তার স্বজনরা তাকে বাড়ি নিয়ে যান। এর আগে রোববার (২৫ অক্টোবর) গভীর রাতে পাবনার ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ওসি বড়ালব্রিজ রেল স্টেশনের প্লাটফর্ম থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে থানায় নিরাপত্তা হেফাজতে রেখেছিলেন।

পিতৃহীন এ মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরীর নাম তানিয়া আক্তার (১৫)। সে চাটমোহর উপজেলার রামপুর গ্রামের মৃত মোশারফ হোসেনের মেয়ে। তার মায়ের নাম মালেকা খাতুন।

ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, রোববার মধ্যরাতে টহল পুলিশ ভাঙ্গুড়া উপজেলার বড়ালব্রিজ রেলস্টেশনের প্লাটফর্মে অজ্ঞাত পরিচয়ের ওই মেয়েটিকে দেখতে পায়। মেয়েটি পুলিশ দেখে এগিয়ে আসে। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে সে তার নাম তনিয়া বলে জানায়। এর চেয়ে বেশি সে কিছুই বলতে পারেনি। পুলিশ সদস্যরা তখন বুঝতে পারেন মেয়েটির স্মৃতিভ্রম হয়েছে কিম্বা মানসিক ভারসাম্যহীনতায় ভুগছে।

এ বিষয়টি ওসি জানার পর তিনি রাতেই স্টেশনে যান। তিনি মেয়েটিকে উদ্ধার করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে থানায় নিরাপত্তা হেফাজতে নেন। এরপর তিনি বিভিন্ন থানায় মেসেজ দেয়ার পাশাপাশি মেয়েটির সন্ধান চেয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এতে বিষয়টি অনেকের নজরে আসার পর তারা মেয়েটির পরিবারকে খবর দেন। তার মামা ইসমাইল হোসেন চাটমোহর থানায় যোগাযোগ করেন। সেখানে স্বজনদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের ভাঙ্গুড়া থানায় পাঠায় চাটমোহর থানা পুলিশ।

মেয়েটির স্বজনরা সোমবার (২৬ অক্টোবর) রাত আটটার দিকে ভাঙ্গুড়া থানায় পৌঁছান। পরে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে তাকে স্বজনদের কাছে তুলে দেন।

মেয়েটির মামা ইসমাইল হোসেন হোসেন জানান, কিছুদিন ধরে তানিয়া মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছে। তারা পুলিশ তথা ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ওসির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, পুলিশ তাকে উদ্ধার না করলে অনেক বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারতো।

ভাঙ্গুড়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন জানান, তিনি মানবিক কারণেই মেয়েটিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যান। প্লাটফর্মে সে খারাপ লোকের খপ্পড়ে পড়লে তার বড় ক্ষতি পারতো। তিনি জানান, মেয়েটির স্বজনদের কাছে তাকে তুলে দিতে পেরে তিনি ও তার মানসিকভাবে তৃপ্ত।

ওসির এমন কাজকে ভাঙ্গুড়ার সুধী সমাজ সাধুবাদ জানিয়েছেন। পুলিশ একটি অসহায় মেয়েকে নিরাপদ হেফাজতে নিয়ে স্বজনদের কাছে তুলে দিয়ে একটি মহৎ কাজ করছে বলে অনেকে মন্তব্য করেছেন।