দালাল বেষ্টিত বরগুনার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, ঘুষ ছাড়া মেলে না সংযোগ

শেয়ার করুনঃ

বিশেষ প্রতিবেদক :: দালাল নির্ভর বরগুনার পল্লী বিদ্যুৎ অফিস। দালাল ও ঘুষ ছাড়া বিদ্যুতের সংযোগ মিলে না। একাধিক অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কর্মকর্তা-কর্মচারিদের যোগসাজসে কাঠালতলীর ইউসুফ মাস্টারের পুত্র মোঃ ফারুক বরগুনার ০৭ নং ঢলুয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ডালভাঙ্গা, মোল্লার হোরা ও মরখালীসহ আশপাশের গ্রামে পল্লী বিদ্যুৎসংযোগ দেয়ার নাম করে প্রতিটি পরিবার থেকে ৭ হাজার টাকা করে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। কেউ অভিযোগ দিলে মিথ্যে মামলার জড়ানোর হুমকি প্রদান করে বলে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা অফিসে যোগাযোগ করলেও কোন সুরহা মিলছে না। বরংচ উল্টো হয়রানির শিকার হচ্ছে গ্রাহকরা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোঃ দেলোয়ার হোসেন, পিতা মৃত কাসেম আলী হাওলাদার, মোঃ খলিলুর রহমান, পিতা মৃত চান মিয়া, মোঃ আরাফাত, পিতা মোঃ খানজাহান আলী হাওলাদার, মোঃ শামীম, পিতা আবদুস সালাম হাওলাদার, মোঃ সেলিম, পিতা মৃত মোসলেম আলী হাওলাদার, মোঃ ইউসুফ, পিতা আঃ গনি হাওলাদার, মোঃ জাকির হোসেন, পিতা মৃত শাহজাহান হাওলাদার, মোঃ সাহেব আলী হাওলাদার, পিতা মৃত তজুমদ্দিন হাওলাদার, মোঃ খানজাহান প্যাদা, পিতা মৃত হাচন প্যাদা, মোঃ জালাল জমাদ্দার, পিতা মৃত খানজাহান জোমাদ্দার, মোঃ আলতাফ হাওলাদার, পিতা মৃত খোরশেদ হাওলাদার, মোঃ সুমন, পিতা মৃত হারুন হাওলাদার, মোঃ বজলু প্যাদা, পিতা ফকরুদ্দিন প্যাদা, মোঃ বারেক প্যাদা, পিতা ফকরুদ্দিন প্যাদা, মোঃ আফজাল ফকির, পিতা গেদু ফকির, মোঃ তোফাজ্জেল, পিতা সাহেব আলী হাওলাদার, মোঃ নান্টু, পিতা মৃত শাহজাহান হাওলাদার, মোঃ হাবিব সরদার, পিতা মৃত সফির সরদার, মোঃ মনসুর সরদার, পিতা মৃত সফির সরদার, মোঃ সেলিম সরদার, পিতা মৃত জামিনা মাস্টার, মোঃ আবুল ফরাজি, পিতা মৃত আক্কেল আলী ফরাজি, মোঃ ফরিদ ফরাজি, পিতা নিজাম ফরাজিসহ ৩ থেকে সাড়ে তিন শতাধিক পরিবারের কাছ থেকে টাকা গ্রহণ করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, পল্লীবিদ্যুৎ অফিসের জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার, ওয়ারিং ইন্সপেক্টর, লাইনম্যান, ইলেক্ট্রিশিয়ানসহ সংশ্লিষ্টদের সিন্ডিকেট অর্ধশত দালালের মাধ্যমে ঘুষ আদায় করে নতুন সংযোগ প্রদানসহ বিদ্যুৎসেবা প্রদান করছে। এ সিন্ডিকেটকে পাশ কাটিয়ে বিদ্যুৎ পাওয়ার চেষ্টাকারীরা মুখোমুখি হন নানা হয়রানীর, দুর্ভোগ, জটিলতা আর দীর্ঘসুত্রিতার। এ প্রতিবেদকের দীর্ঘ অনুসন্ধানে ঘুষ দুর্নীতির এসব নানা তথ্য পাওয়া গেছে।

এছাড়া অভিযোগ রয়েছে, আবেদন করে বছরের পর বছর ধরণা দিয়েও বিদ্যুৎ প্রত্যাশীরা সংযোগ পান না। এমনকি এক ইউনিয়নের দালাল অন্য ইউনিয়নে কাজ করে। ফলে তাদের খুঁজেও পাওয়া যায় না।

এ ব্যাপারে ইউসুফ মাস্টারের পুত্র মোঃ ফারুক হোসেন’র সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের কোর্টে মামলা করতে বলেন। আপনি পল্লিবিদ্যুতের কোন পদে কর্মরত আছেন প্রশ্নের জবাবে উত্তর দেন সংবাদ প্রকাশের পরে আমার পরিচয় জেনে যাবেন।

এ ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ার ফরিদুল ইসলামের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি গত ৩ বছর যাবত বরগুনায় থাকিনা। এব্যাপারে আমার কোনো তথ্য জানা নাই। ইউসুফ মাস্টারের পূত্র ফারুক হোসেনকে চেনেন কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরবর্তীতে একাধিকবার তার সাথে যোগাযোগ করা হলেও তিনি তার সেলফোনটি রিসিভ করেননি।

তবে ভুক্তভোগীরা প্রধানমন্ত্রীসহ বরগুনা জেলা প্রশাসক, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। এলাকার সুশীলসমাজ মনে করেন সুষ্ঠু তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে থলের বিড়াল। জানা যাবে কে এই ফারুক? তার খুঁটির জোর কোথায়?