ভারতে গরু-মহিষের মাংস থেকে ‘হালাল’ শব্দ বাদ

শেয়ার করুনঃ

অনলাইন ডেস্ক :: গরু-মহিষসহ সব ধরনের প্রক্রিয়াজাত রেড মিট থেকে হালাল শব্দটি সরিয়ে দিয়েছে ভারত সরকার। কয়েকটি হিন্দু সংগঠন অভিযোগ করেছে, হালাল শব্দটি মুসলমান রফতানিকারকদের ব্যবসায় বেশি সুবিধা দিচ্ছে। তাদের পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ ওঠার পরপরই ‘হালাল’ শব্দটি সরিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে নিশ্চিত করা হয়েছে।

এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড প্রসেসড ফুড প্রডাক্টস এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (এপিইডিএ) ম্যানুয়ালের পরিবর্তিত সংস্করণে লেখা হয়েছে, আমদানিকারক দেশ বা আমদানিকারকদের চাহিদা অনুযায়ী প্রাণী বধ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের আগের সংস্করণে লেখা ছিল, ইসলামি দেশগুলোর চাহিদা কঠোরভাবে মেনে প্রাণীদের হালাল পদ্ধতিতে জবাই করা হয়েছে।

‘হালাল’ শব্দটি নিয়ে হিন্দু সংগঠনগুলো অনেক দিন ধরেই মুখর হয়ে উঠেছে। অনেকে অভিযোগ করেছেন, এপিইডিএ’র ম্যানুয়ালে হালাল শব্দের ব্যবহারের অর্থ আমদানিকারকদের শুধু হালাল সার্টিফিকেট পাওয়া মাংস নিতে বাধ্য করা। এ ধরনের সার্টিফিকেট যারা দিচ্ছেন না তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

তাদের বক্তব্য, শুধু পশ্চিম এশিয়ার ইসলামি দেশগুলোতেই নয়, চীনের মতো দেশেও মাংস রফতানি করে ভারত। সেখানে হালাল সার্টিফিকেট জরুরি নয়। শ্রীলঙ্কায়ও মাংস সরবরাহ করে দিল্লি। হালাল সার্টিফিকেশন সেখানে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এরপরও আমদানির জন্য মাংস মাত্রই হালাল শব্দের ব্যবহার নিষ্প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।

গত মাসে বিজেপি পরিচালিত দক্ষিণ দিল্লি পৌরসভা জানায়, যে মাংস বিক্রি হচ্ছে তা হালাল কীনা তা রেস্তোরাঁ বা মাংসের দোকানকে লিখিতভাবে জানাতে হবে। পৌরসভার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন রাজদত্ত গেহলোট দাবি করেন, রেস্তোরাঁয় কী ধরনের মাংস পরিবেশন করা হচ্ছে তা ঠিকমতো জানা যাচ্ছে না বলে তাদের কাছে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়েছে। এ প্রস্তাব গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশেষ করে করোনা আবহে খাবারের মান নিয়ে মানুষজন অনেক বেশি সন্দিহান হয়ে পড়েছেন; তাই এ ব্যাপারে অভিযোগের সংখ্যা বেড়েই চলছে। আরবিতে হালাল শব্দের অর্থ অনুমোদিত, শরিয়াহ আইনসম্মত। শরিয়াহ আইন বলছে, জবাইয়ের সময় প্রাণীটি জীবন্ত হতে হবে এবং ইসলামি নিয়ম অনুযায়ী জবাই করতে হবে। উল্টো দিকে ভারতসহ অনেক দেশেই এক কোপে প্রাণী জবাই করার রীতি রয়েছে, যা ইসলামে হারাম বলে গণ্য। মুসলিমদের কাছে খাবারের হালাল, হারাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। এমন স্পর্শকাতর একটি বিষয় নিয়ে নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়ে মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানা হয়েছে।