ভোলায় ত্রাণের কথা বলে কাউন্সিলরদের টাকা হাতিয়ে নিল প্রতারক চক্র

শেয়ার করুনঃ

ভোলা প্রতিনিধি :: ভোলার লালমোহন পৌরসভায় দুস্থদের মাঝে ত্রাণ ও নগদ টাকা সহায়তা দেওয়ার কথা বলে কাউন্সিলরদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিলে গেলেন প্রতারক চক্র। গত রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এসব টাকা হাতিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে ঘটনাটি বুঝতে পেরে বৃহস্পতিবার রাতে লালমোহন থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন এক কাউন্সিলর।

পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ঈমাম হোসেন হাওলাদার বলেন, গত মঙ্গলবার ০১৭৮৬৮২৬৩৬৭ নম্বর থেকে মামুনুর রশীদ পরিচয় দিয়ে নিজেকে রেড ক্রিসেন্টের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে লালমোহন পৌরসভার মেয়র ও এক কাউন্সিলরের কাছে ফোন করে তাকে জানানো হয়, প্রতি ওয়ার্ড থেকে ৫ জন করে দুস্থদের জন্য রেড ক্রিসেন্টের পক্ষ থেকে প্রতিজনকে ৩০ কেজি চাল, ডাল, তেল, কম্বল ও নগদ ৪ হাজার ২০০ টাকা দেওয়া হবে। এজন্য ২ ঘণ্টার মধ্যে তালিকা দিতে হবে। ওই নম্বর পৌরসভার প্রধান সহকারী সাখাওয়াত হোসেনের কাছে পাঠিয়ে কাউন্সিলরদের বিষয়টি জানাতে বলা হয়। সাখাওয়াত হোসেন ওই নম্বর প্রত্যেক কাউন্সিলরকে মেসেজ দিয়ে পাঠিয়ে ৫টি করে নাম দিতে বলেন।

কাউন্সিলর ঈমাম হোসেন জানান, এই নম্বরটিতে যোগাযোগ করলে ৫টি নামের অতিরিক্ত নাম চাইলে ঢাকা অফিসের অফিসারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে তার নম্বর দেওয়া হয়। পরে ০১৭৫০৬৮৬১২১ নম্বরে যোগাযোগ করলে শফিকুর রহমান পরিচয় দিয়ে আরও ৩০টি নামের জন্য রাজি হয়ে ৬৫০ টাকা করে দিতে হবে বলে জানান।
৩০ কেজি চাল, ডাল, তেল, কম্বলের সঙ্গে নগদ ৪২০০ টাকা করে পাবে এ আশায় তিনি ১৯ হাজার ৯০০ টাকা তার দেয়া অন্য নম্বরে বিকাশে পাঠিয়ে দেন। পরদিন আবার ওই নম্বর থেকে ফোন করে আরও নাম দেওয়া যাবে বলে জানালে ঈমাম হোসেন প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পারেন। বিষয়টি প্রতারক চক্রের কাজ বলে তিনি বুজতে পারেন।
৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রায়হান মাসুম জানান, তিনিও একইভাবে দুইবার ৭১ হাজার টাকা পাঠিয়েছেন।

১০নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সিরাজ মাতাব্বর পাঠিয়েছেন ৩৬ হাজার টাকা, ১১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন পাঠিয়েছেন ১৯ হাজার ৯০০ টাকা এবং সংরক্ষিত ৭, ৮, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের স্বামী ফজলুর রহমান ভুট্টো পাঠিয়েছেন ৬ হাজার ৫০০ টাকা।কাউন্সিলররা জানান, টাকা নেওয়ার পর ওই নম্বরগুলো বন্ধ করে রাখা হয়েছে। এ ধরনের প্রতারণা করা হবে তারা তা ভাবতে পারেননি। প্রশাসনিকভাবে ট্র্যাকিং করে নম্বরগুলো বান্দরবানের আলীকদম এলাকায় পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শাখাওয়াত হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

লালমোহন থানার ওসি মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, অভিযোগ পেয়ে আমরা কললিস্ট চেয়েছি। আইনিভাবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।’

এ ব্যাপারে লালমোহন পৌরসভার মেয়র এমদাদুল ইসলাম তুহিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার কাছে এ ধরনের ফোন আসেনি। এক কাউন্সিলর বিষয়টি অবহিত করেন। পরে আমি কোনো অফিস আদেশ ছাড়া এ ধরনের ফোনে ত্রাণ দেওয়ার বিষয়টি যাচাই-বাছাই করতে বলি। এর মধ্যে কোনো কাউন্সিলর ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে কী দিয়েছে সেটা আমার জানা নেই। তবে বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে প্রশাসনের প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করে প্রতারকদের শাস্তির ব্যাবস্থার দাবী জানান।’