পৌরসভা নির্বাচনে টাকার বিনিময়ে নিয়োগ হচ্ছে পছন্দের প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসার

শেয়ার করুনঃ

অনলাইন ডেস্ক :: আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য সিরাজগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগে তদবির বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি আমিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।

আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে কাউন্সিলর প্রার্থীদের পছন্দনীয় সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ দেয়ার কথা বলে মোটা অংকের অর্থ লেনদেন করেছেন তিনি। বিনিময়ে ভোট নিয়ে দেয়ার আশ্বাসে নিজস্ব শিক্ষকদের নির্বাচনী ডিউটি দেয়ার দায়িত্ব নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে বিভিন্ন স্কুলের তালিকাও দিয়েছেন তিনি।

এতে অনেক শিক্ষকই ডিউটি থেকে বাদ পড়েছেন। বিগত তিনটি নির্বাচনে তিনি এভাবে ডিউটি বাণিজ্য চালিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ডিউটি বঞ্চিত শিক্ষকরা তাদের ডিউটি থেকে বাদ পড়ার কারণ জানতে গিয়ে এসব অপকর্ম দেখে হতবাক হন। বঞ্চিত শিক্ষকদের কেউ কেউ কিছু প্রমাণও সংগ্রহ করেন।

সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসারের কার্যালয়ে সহকারী রিটানিং কর্মকর্তা মো. আজিজার রহমানের টেবিলে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন আমিরুল ইসলাম।

জানা যায়, নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করার জন্য ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করতে প্রিসাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার নিয়োগ করেন রিটারিং কর্মকর্তা। নির্বাচনের দায়িত্ব পালন করার জন্য তাদেরকে ভালোমানের সম্মানী প্রদান করে থাকে নির্বাচন কমিশন।

আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য সিরাজগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ১৫ ওয়ার্ডের ৫৭টি কেন্দ্রে ৩০২টি বুথে ৩০২ জন সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ও ৬০৪ জন পোলিং অফিসার নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন।

এ উপলক্ষে গত ৪ জানুয়ারি থেকে সহকারী রিটারিং কর্মকর্তা মো. আজিজার রহমানের টেবিলে কোন শিক্ষক কোথায় নির্বাচনের ডিউটি করবেন তা নির্ধারণ করে দিচ্ছেন আমিরুল ইসলাম। ডিউটি দেয়ার জন্য প্রতি শিক্ষকের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ৩শ টাকা করে। অভিযোগ রয়েছে ৩শ টাকার কম দিলে তাকে আর ডিউটি প্রদান করা হয়নি।

আবার ১৫টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী ও মহিলা কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে কাউন্সিলর প্রার্থীদের পছন্দের শিক্ষক নিয়োগদানের ব্যবস্থা করেছেন আমিরুল।

তবে এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আমিরুল ইসলাম বলেন, শিক্ষকদের তদবিরের কারণেই আমি নির্বাচন অফিসে অবস্থান করেছি।

এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আপেল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা নির্বাচনী ডিউটি পালনকারী শিক্ষকদের তালিকা নির্বাচন কর্মকর্তা বরাবর পাঠিয়েছি। সেখানে শিক্ষক নেতাদের থাকার কথা না।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. অজিজার রহমানের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষক নেতা অমিরুল ইসলাম এখানে এসেছেন কিন্তু কোনো তদবির করেননি।

রাত ১১ থেকে ১টা পর্যন্ত শিক্ষক নেতা নির্বাচন অফিসে কী কাজ করেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, এমন ঘটনা আমার জানা নেই।

সিরাজগঞ্জ জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মাদ তফাজ্জল হোসেন বলেন, এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি এখনই খোঁজ নিচ্ছি।