আত্মহত্যার ২ মাস পর ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে স্কুলছাত্রীর আপত্তিকর ভিডিও

শেয়ার করুনঃ

অনলাইন ডেস্ক :: রংপুরের বদরগঞ্জে আত্মহত্যার দুই মাস পর নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর (১৫) আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গত ৫ জানুয়ারি নিজ বাড়িতে ওই ছাত্রী বিষপান করে। মোবাইল ফোন কিনে না দেয়ায় মেয়েটি বিষপানে আত্মহত্যা করে বলে তখন পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়।

ভিডিওটিতে স্থানীয় হাফিজুর রহমান (৩০) নামে এক যুবককে দেখা যায়। এলাকাবাসীর ধারণা, হাফিজুর প্রেমের ফাঁদে ফেলে মেয়েটিকে ব্ল্যাকমেইল করতে ভিডিওটি ধারণ করে। এ নিয়ে ক্ষোভ-লজ্জায় মেয়েটি আত্মহননের পথ বেছে নিতে পারে।

হাফিজুর ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য ইউনুছ আলীর ছেলে। অভিযোগ উঠেছে, ওই ভিডিও ধারণ করেছেন বিপুল চন্দ্র (২৬) নামের একজন। বিপুলের সঙ্গে হাফিজুরের বন্ধুত্ব আছে।

৫ জানুয়ারি সকালে নিজ বাড়িতে ওই ছাত্রী বিষ পান করে। মেয়েটিকে বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিতে বলেন। পরে রংপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দিন সন্ধ্যায় সে মারা যায়।

সোমবার (৮ মার্চ) সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ভিডিওটি এলাকায় ভাইরাল হয়েছে ১৫ দিন আগে। এরপর থেকে তাদের বাড়িতে কেউ নেই। কোথায় গেছে, প্রতিবেশীরা কেউ জানেন না। বাড়িতে তালা ঝুলছে।

ওই এলাকার ইউপি সদস্য ফজু মিয়া বলেন, ‘ওই ছাত্রীর একটি আপত্তিকর ভিডিও প্রকাশের ঘটনার কথা শুনেছি। মানসম্মানের ভয়ে মেয়েটি নাকি আত্মহত্যা করে। তার পরিবার হতদরিদ্র।’

হাফিজুর রহমানের বাবা ইউনুছ আলী বলেন, ‘আমি ইউপি নির্বাচন করব। প্রতিপক্ষ আমাকে ও আমার পরিবারকে ঘায়েল করতে আমার ছেলের নামে এমন অপপ্রচার ছড়াচ্ছে।’

তার ছেলে হাফিজুরের খোঁজ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘চার-পাঁচ দিন ধরে সে বাড়িতে নেই।’

এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়েটি আত্মহনন করার পর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে বিপুল চন্দ্রের মুঠোফোনে হাফিজুর রহমান ও আত্মহত্যা করা কিশোরীর ভিডিও। তিন যুবক ১৫-১৬ দিন আগে স্থানীয় বাজারে বিপুলকে আটক করে তার মুঠোফোন থেকে মেমোরি কার্ড খুলে নেয়ার পর এলাকায় ওই ভিডিও ভাইরাল হয়।

ওই ছাত্রীর চাচা ভবেশ চন্দ্র দাস বলেন, ‘ঘটনার সময় আমি বাড়িতে ছিলাম না। মেয়ের মা জানায়, মোবাইল কিনে না দেয়ায় সে অভিমান করে আত্মহত্যা করে। ওই সময় কারো প্রতি কোনো অভিযোগ না থাকায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।’

বদরগঞ্জ থানার ওসি হাবিবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই সময় থানায় কেউ কোন অভিযোগ করেনি। এখন নিহতের পরিবারের কেউ একজন অভিযোগ করলে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হবে।’