বরিশাল পলিটেকনিক কলেজের ফেসবুক পেজ হ্যাক, অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ

শেয়ার করুনঃ

শামীম আহমেদ :: বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের ফেসবুক পেজ হ্যাক করে কুরুচিপূর্ণ অডিও ভিডিও আপলোড করার অপরাধে অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল আইনে মামলার সুপারিশ করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।

৪ এপ্রিল বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষক কর্মচারীদের ৪ টি সংগঠনের যৌথ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ সকাল ১১ টার দিকে পূর্বপরিকল্পিত ভাবে বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সিভিল বিভাগের ওয়ার্কশপ সুপার মোঃ রেজাউল বাহার ইন্সটিটিউটের রেজিষ্ট্রেশন সেকশনের সামনে এক শিক্ষককে শারীরীক ভাবে লাঞ্ছিত করে। এ সময় সিভিল বিভাগের ইন্সট্রাক্টর কামরুজ্জামান ওয়ার্কশপ সুপার রেজাউল বাহারের পক্ষ অবলম্বন করে ঐ শিক্ষককে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও শারীরীক ভাবে লাঞ্ছিত করার জন্য উদ্ধত হলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত শিক্ষক কর্মচারীরা তাদের নিবৃত করেন।

পরে সকল শিক্ষক কর্মচারী মিলে পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মোঃ রুহুল আমিনের কাছে উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানান, এ সময় অধ্যক্ষ ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করে পরবর্তী ব্যাবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন। পরে ২৭ মার্চ ডাইরেক্টর অব টেকনিক্যাল এডুকেশন (ডিটিই) কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত দুই জনকে তাৎক্ষনিক বদলীর আদেশ দেন। এর মধ্যে রেজাউল বাহারকে ফেনী পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে এবং কামরুজ্জামানকে সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে বদলী করা হয়।

এদিকে বদলীর আদেশ প্রাপ্তির পরেই সিভিল বিভাগের ওয়ার্কশপ সুপার মোঃ রেজাউল বাহার পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস পরিচালনার জন্য পলি ওসিপি নামের ফেজবুক পেজটি হ্যাক করে এডমিন থেকে অধ্যক্ষকে বাদ দিয়ে তিনি নিজেই ফেজবুক পেজের নিয়ন্ত্রন নেন। এবং পেজের নাম পরিবর্তন করে অনলাইন ফেইজবুক নামদিয়ে প্রশাসন সহ বিভিন্ন শিক্ষক কর্মচারীদের নামে এডিট করে অসত্য ও কুরুচিপূর্ণ অডিও ও ভিডিও আপলোড করে শিক্ষক কর্মচারীদের চরিত্র হননের অপচেষ্টা চালিয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাস থেকে বঞ্চিত করেন।

এর প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার সুপারিশ ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে পলিটেকনিক ইন্সটিউটের শিক্ষক কর্মচারীদের ৪ টি সংগঠনের যৌথ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

যৌথ সভার সিদ্ধান্তে আরও জানা গেছে, সিভিল বিভাগের ওয়ার্কশপ সুপার মোঃ রেজাউল বাহার বিভিন্ন অনৈতিক, অশালীন ও ওদ্ধতপূর্ন আচরনের জন্য শিক্ষক কর্মচারীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতিপূর্বে তাকে ৯ বার বদলী করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু বরিশাল থেকেই ৩ বার বদলী করা হয়েছে।

এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বরিশাল পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মোঃ রুহুল আমিন বলেন, আমি তাৎক্ষনিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। যার প্রেক্ষিতে তাদের দুজনকেই বদলী করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের ফেজবুক পেজ হ্যাক করার বিষয়টিও জানানো হয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যথাযথ ব্যবস্থা নেবেন।