মাদরাসা শিক্ষার্থীকে মারধরের ভিডিও ভাইরাল, শিক্ষক বহিষ্কার

শেয়ার করুনঃ

অনলাইন ডেস্ক :: কুড়িগ্রামে নির্ধারিত বাড়ির কাজ না লিখে অন্য লেখা জমা দেয়ার অপরাধে এক শিশু (৭) শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন মাদরাসা শিক্ষক। এ ঘটনায় সোমবার (১৯ এপ্রিল) বিকেলে অভিযুক্ত শিক্ষককে বহিষ্কার করেছে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ।

গত ২৭ মার্চ ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউনিয়নের ঢেবঢেবি বাজার কুলছুম কওমি মাদরাসায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত শিক্ষক একই উপজেলার পাথরডুবি বাজারের হাবিবুর রহমানের ছেলে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ওই মাদরাসার দ্বিতীয় জামাতের শিক্ষার্থী।

শিক্ষার্থীকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।

ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া দুই মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, মাদরাসার শিক্ষক আবু সাইদ ওই শিক্ষার্থীর কাছ থেকে পড়া আদায় করছেন। কিছুক্ষণ পর তিনি তাকে বেত দিয়ে গুতা দিয়ে মাটিতে ফেলে মারধর করতে থাকেন।

শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, ছেলেকে বাড়ির কাজের জন্য নির্দিষ্ট একটি লেখা দেয়া হয়েছিল। সে অন্য লেখা শিক্ষকের কাছে জমা দেয়ায় এমন মারধর করেছেন ওই শিক্ষক। ছেলে বাড়িতে এসে ভয়ে এটি জানায়নি আমাদের।

তিনি আরো বলেন, সোমবার দুপুরে ফেসবুকে ভিডিওটি দেখে আতকে উঠি। বাড়িতে গিয়ে ছেলের কাছে সব জানতে পারি। ছেলে জানায়, মারের কথা কাউকে বললে তাকে মেরে ফেলবে বলে হুজুর হুমকি দিয়েছেন।

তিনি বলেন, আমার ছেলে ছাড়াও আরো তিন-চারজন শিক্ষার্থীকে ওই হুজুর একইভাবে নির্যাতন করেছে বলে জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে মাদরাসা কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা সোমবার বিকেলে সালিশে বসার কথা ছিল। কিন্তু আমি সেখানে উপস্থিত থাকতে পারিনি।

অভিযুক্ত শিক্ষক আবু সাইদ বলেন, ঘটনাটি প্রায় দেড়-দুই মাস আগের। সেখানে দ্বিতীয় জামাতের কোনো শিক্ষার্থী ছিল না। যারা ছিল তারা সবাই তৃতীয় জামাতের শিক্ষার্থী। পরীক্ষা চলার সময় শিক্ষার্থী আমার সঙ্গে বেয়াদবি করায় একটু শাসন করেছি।

মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মৌলভী মাওলানা আবু বক্কর সিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষক দেড় বছর থেকে এ মাদরাসায় শিক্ষকতা করেন। সোমবার মাদরাসার এক সভায় তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

কুড়িগ্রামের পুলিশ সুপার সৈয়দা জান্নাত সাংবাদিকদের বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। ঘটনার সত্যতা পেলে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারের নির্দেশ অমান্য করে মাদরাসা চালু রাখা ও শিশু নির্যাতনের অভিযোগসহ দুটি মামলা করা হবে।