বরগুনায় পালিত বাবার ধর্ষণে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কিশোরী, অতঃপর…

শেয়ার করুনঃ

বরগুনা প্রতিনিধি :: বরগুনায় এক হতদরিদ্র স্বামী পরিত্যক্তা মা অভাব অনটনের কারণে নিঃসন্তান দম্পতির কাছে নিজের ৭ বছরের মেয়েকে লালন-পালন জন্য দত্তক দিয়েছিলেন। পালিত পিতার লালসার শিকার হয়ে সেই মেয়েটি এখন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। চিকিৎসক তার সন্তান প্রসবের তারিখ নির্ধারণ করেছেন ৯ই মে। মেয়েটি বর্তমানে বরগুনা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা করায় পালিত পিতা আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ।

অভাব অনটনের কারণে ঢাকার নিঃসন্তান এক দম্পতির কাছে সাত বছরের মেয়েকে লালন-পালন জন্য দিয়েছিলেন বরগুনার স্বামী পরিত্যক্তা এক হতদরিদ্র মা। এখন মেয়েটির বয়স ১৪। গত ২৭শে এপ্রিল অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সন্তান প্রসবের জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয় মেয়েটি।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, শিশুটির আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট অনুসারে, আগামী ৯ই মে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ বিষয়ে নির্যাতিত ওই শিশুটির মা বলেন, ‘ওর বাফে আমারে ছাইড়া দেওনের পর আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরকারি ঘরে থাকতেছি। বাপ নাই হেইতে মাইয়াডার ভবিষ্যৎ চিন্তা হইরা বরগুনার আনোয়ার হোসেন আর মোর্শেদা বেগম লায়লার ধারে মাইয়াডারে পালতে দিছি। হ্যারা নিজেগো মাইয়া পরিচয় দিয়া মোর মাইয়াডারে পালনের কথা কইয়া ঢাকায় নেছিলো।’

তিনি আরো বলেন, ‘নিজের মাইয়া পরিচয় দিয়া পালনের কথা কইয়া মোর মাইয়াডার সর্বনাশ করছে। আনোয়ারের ধর্ষণে মোর ১৪ বছরের মাইয়াডা এহন ৯ মাসের পোয়াতি হইছে। নিজের মাইয়ার বয়সী একটা মাইয়ারে যে ধর্ষণ করতে পারে, মুই হ্যার ফাঁসি চাই, এইয়ার ক্ষতিপূরণও চাই।’ এ ঘটনায় গত ১লা ফেব্রুয়ারি আনোয়ার-লায়লা দম্পতিকে আসামি করে বরগুনা সদর থানায় মামলা করেন শিশুটির নানি। ওইদিনই আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।

আনোয়ার বরগুনা পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের থানাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। চাকরির সুবাদে স্ত্রী লায়লা এবং পালিত ওই শিশুকন্যাকে নিয়ে তিনি ঢাকায় বসবাস করতেন।

এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার এসআই নূরে জান্নাত কেয়া জানান, বিভিন্ন সময়ে ধর্ষণের অভিযোগে মামলায় আনোয়ার হোসেনকে ও ধর্ষণে সহযোগিতা করার জন্য তার স্ত্রী মোর্শেদা বেগম লায়লাকে আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই আমরা আনোয়ারকে গ্রেপ্তার করেছি। শিশুটি সন্তান প্রসব করলে সেই সন্তানের ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে। তারপর এ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে। এরপর মামলার বিচার কাজ শুরু হবে।