ফের ‘দশে দশ’ করতে পারবে বাংলাদেশ?

শেয়ার করুনঃ

অনলাইন ডেস্ক :: ঘরের মাঠে ওয়ানডে ক্রিকেটে প্রায় এক দশক ধরে রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য এক দল বাংলাদেশ। ২০১২ সালের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত খেলা ১৬টি সিরিজের মধ্যে মাত্র ৩টিতে হেরেছে টাইগাররা, জয় বাকি ১৩টিতে। আর যদি হিসেব করা হয় ২০১৪ সালের জুলাইয়ের পর থেকে, তাহলে বাংলাদেশের হেরে যাওয়া সিরিজ মিলবে মাত্র একটি।

২০১৬ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১-২ ব্যবধানে হেরেছিল বাংলাদেশ। সে সিরিজেও প্রথম ম্যাচটি ছিল হাতের মুঠোয়। একপর্যায়ে ৫২ বলে ৩৯ রান প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের, হাতে ছিল ৬টি উইকেট। সেই অবস্থা থেকে ম্যাচটি জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ফলে পাওয়া হয়নি ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ।

এছাড়া ২০১২ সালের শুরু থেকে এখনও পর্যন্ত ঘরের মাঠে ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার মতো দলগুলোর বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে লঙ্কানদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের স্বাদ মিলেছে গত মঙ্গলবার (২৫ মে), ১০৩ রানের বড় জয়ের মাধ্যমে।

সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে শিরোপা নিশ্চিত হওয়ার পর এবার হোয়াইটওয়াশ মিশনে নামবে বাংলাদেশ। পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ড ছাড়া বড় দলগুলোর মধ্যে আর কাউকে হোয়াইটওয়াশ করার নজির নেই বাংলাদেশের। শুক্রবারের ম্যাচটি জিতলে সেই স্বাদ পাবে তামিম ইকবালের দল।

শুধু তাই নয়, শুক্রবার জিতলে ঘরের মাঠে টানা দশ ম্যাচ জেতার স্বাদ পাবে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৪ উইকেটে হেরেছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার নেতৃত্বাধীন দল। এরপর থেকে ওয়ানডে ফরম্যাটে ঘরের মাঠে আর নেতিবাচক ফলের মুখোমুখি হতে হয়নি তাদের।

এসময়ের মধ্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৩ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২ ম্যাচে জিতেছে বাংলাদেশ। শুক্রবার টানা দশম জয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তারা। তবে ম্যাচটি জিতলে ঘরের মাঠে টানা দশ জয়ের প্রথম ঘটনা হবে না এটি। কারণ এর আগেও ঘরের মাঠে টানা দশ ম্যাচ জেতার নজির রয়েছে বাংলাদেশের।

সেটি ২০১৪-১৫ সালের কথা। হতাশাময় ২০১৪ সালের শেষদিকে বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কত্ব দেয়া হয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজাকে। তার প্রথম এসাইনমেন্ট ছিল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। সেই সিরিজে পাঁচ ম্যাচের সবকয়টিতে জিতেছিল বাংলাদেশ। পরে বিশ্বকাপে মাশরাফির অধিনায়কত্বেই কোয়ার্টার ফাইনালে খেলে টাইগাররা।

বিশ্বকাপ শেষে পাকিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। এরপর আসে ভারত। মোস্তাফিজুর রহমানের জাদুতে তাদের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজের শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলে স্বাগতিক বাংলাদেশ দল। যার মাধ্যমে প্রথমবারের মতো ঘরের মাঠে টানা ১০ ওয়ানডে জয়ের রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। সেই সিরিজের শেষ ম্যাচটি হারায় থেমে যায় জয়যাত্রা।

এবার দ্বিতীয়বারের মতো টানা দশ ওয়ানডে জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবারের ম্যাচটি জিতলেই হবে এই চক্রপূরণ। বৃহস্পতিবার ম্যাচের আগে শেষ অনুশীলনে সেই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী মন্তব্যই করেছেন জাতীয় দলের অভিজ্ঞ তারকা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। প্রথম দুই ম্যাচের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারলে অসম্ভব হবে না টানা দশম জয় তুলে নেয়া।

উল্লেখ্য, ঘরের মাঠে টানা সর্বোচ্চ জয়ের রেকর্ড শ্রীলঙ্কার দখলে। ১৯৯৬ সালে নিজেদের মাঠে টানা ১৪টি ম্যাচ জিতেছিল তারা। এরপর পরিত্যক্ত হয় একটি ম্যাচ, পরে আরও চারটি ম্যাচ জেতে তারা। ফলে পরিত্যক্ত ম্যাচটি বাদ দিলে টানা ১৮ ম্যাচ জয়ের রেকর্ড রয়েছে লঙ্কানদের।

এই হিসেবে আবার তাদের সঙ্গী হিসেবে রয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ২০১৪ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৯ ওয়ানডের মধ্যে ১৮টি জিতেছিল অসিরা, পরিত্যক্ত হয় অন্য ম্যাচটি। টানা ছয় ম্যাচ জেতার পর পরিত্যক্ত হয় একটি ম্যাচ। এরপর আবার টানা ১২টি ম্যাচ জিতে নেয় পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।