থানাকে আরও আস্থার পরিবেশে রুপান্তর করতে হবে : পুলিশ কমিশনার

শেয়ার করুনঃ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খান বিপিএম-বার বলেছেন, থানাকে আরও আস্থার পরিবেশে রুপান্তর করতে হবে। অফিসার ইনচার্জের কাছে এলে সেবার মান যতটা পাওয়া যায়, ডিউটি অফিসারের কাছেও যেন তদ্রূপ আস্থা ও ভরসার সাথে প্রত্যাশার সমান সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা ইউনিফর্মধারী প্রশিক্ষিত পুলিশ সদস্য। সরকারি আদেশ ব্যতিত সেচ্ছাধীন নয়। প্রতিমাসে ভালো কাজের স্বীকৃতি তথা সেবার মান হিসেবে বিভিন্ন খাতে উন্নত মানের বৈধ যত ধরনের সুযোগ ও পুরস্কার দিয়ে উৎসাহিত করে থাকি।

বুধবার (২৩ জুন) সকাল সাড়ে ১০ টায় বরিশাল পুলিশ লাইন্স মেট্রোপলিটন পুলিশের মাসিক কল্যাণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

পুলিশ কমিশনার কল্যাণ সভার শুরুতেই সকল পুলিশ সদস্যদের বিবিধ কল্যাণে বিগত মাসের আবেদনের প্রেক্ষিতে গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন ও চলতি মাসের বিভিন্ন সদস্যদের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন ধরনের কল্যাণমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এসময় তিনি সুষম খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, আবাসনসহ নানান ধরনের কল্যাণ সাধন নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি পুলিশের আচার-আচরণ, শৃঙ্খলা, ড্রেসরুল সহ নানাবিধ বিষয়ের উপর গুরুত্বপূর্ণ দিক-নির্দেশনা দেন।

উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে অবাধ ও সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনী পরিবেশ উপহার দেয়া প্রশংসনীয় ভূমিকায় কর্তব্যরত সকল পদমর্যাদার অফিসারবৃন্দদের সাধুবাদ জানিয়ে প্রত্যেককে পুরস্কার ঘোষণা করে
তিনি আরও বলেন, প্রলোভন এড়িয়ে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছানো যে সক্ষমতা আমরা অর্জন করেছি। সেই লক্ষ্য, উদ্দেশ্য মাথায় রেখে পেশাদারিত্বের সাথে আরও বেগবান হয়ে জনকল্যাণে কাজ করতে হবে।

পুলিশ কমিশনার বলেন- আমরা শুভশক্তি বলে সকল কাজে একধাপ এগিয়ে আছি, চারপাশের ক্রমবর্ধমান করোনা সংক্রমণ থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রেখে বৈশ্বিক মহামারিতে নিয়মিত কর্তব্যের পাশাপাশি ২৪ ঘন্টা নগরীর শ্বাসকষ্ট রোগীর প্রাথমিক স্টেজে অক্সিজেন সেবা সরবরাহ, সচেতনতামূলক কার্যক্রম সহ নানাবিধ মানবিক সাহায্য নিয়ে কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে, পেশাদারিত্ব ছাপিয়ে নিজেদের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে মানবিক পুলিশিং তুলে ধরতে হবে।এভাবে আমরা নিজেদের সুরক্ষিত রেখে অন্যের জীবন-জীবিকা সুরক্ষিত রাখতে পারলে আমাদের অর্থনীতির চাকা সমুন্নত রেখে অনেক দূর এগিয়ে নিতে পারবো।

তিনি আরও বলেন- প্রযুক্তির ব্যবহারে জনগণের দোরগোড়ায় নির্ভেজাল সেবা ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে আমরা এই শহরে অপরাধ নিবারণের সহায়ক হিসেবে ভিডিও থেরাপি বা ফটো থেরাপীকল্পে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে নিজস্ব ব্যবস্তাপনায় গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেগুলোতে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন এবং তা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমান্ড এন্ড কন্ট্রোল সেন্টার এর মাধ্যমে বিশ্লেষণ ও মনিটরিং এর মাধ্যমে নগরীকে সুরক্ষিত রাখার এক কর্মযজ্ঞ হাতে নিয়েছি, এর মাধ্যমে নগর নিরাপত্তায় অপরাধীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করার অবারিত সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও গুগল প্লে স্টোরের হ্যালো বিএমপি এ্যপস এর মাধ্যমে জনগণের জনগণের সাথে সংযোগ সহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে আমাদের যেসকল প্রস্তুতি রয়েছে সেগুলো আরও ভালোভাবে সচেতনতার সাথে খেয়াল রেখে যথাযোগ্য ব্যবহার করার মাধ্যমে একটি নিরাপদ নগরী উপহার দেয়া সম্ভব মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এসময় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার প্রলয় চিসিম বলেন, স্মার্ট সেবা নিশ্চিত করতে হলে নিজেদের আরও স্মার্ট হিসেবে জনগণের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। প্রতিটি পুলিশ সদস্যকে পুলিশ হেডকোয়ার্টার এর নির্দেশনা, সাপ্লাই ও ড্রেস রুল অনুযায়ী ইউনিফর্ম পরিধান করতে হবে, আগ্নেয়াস্ত্রের যথাযথ সংরক্ষণ ও ব্যবহার করতে হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অপারেশন এন্ড প্রসিকিউশন) মোঃ এনামুল করীম বলেন, এই বর্ষাকালে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যায়, ব্যবহার শেষে উচ্ছিষ্টাংশ, খাবার মোড়ক যত্রতত্র না ফেলে নিদৃষ্ট স্থানে ফেলা সহ বসবাসস্থলের আশপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রেখে আন্তরিক অংশগ্রহণে সকলের সুঅভ্যাসের পরিচয় দিতে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন।

উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর দপ্তর) মোঃ নজরুল হোসেন ফোর্সের কল্যাণে তথা সুলভ মূল্যে উন্নতমানের স্বাস্থ সম্মত খাবার পরিবেশনে বিএমপির কেন্টিনের মানোন্নয়নের গুরুত্বআরোপ করেন।

কল্যাণ সভা শেষে ভালো কাজ এবং বিভিন্ন আভিযানিক কাজের সফলতার জন্য বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসারদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন সভাপতি মহোদয়।

সহকারী পুলিশ কমিশনার (এয়ারপোর্ট থানা এন্ড স্টাফ অফিসার) মাসুদ রানার সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন উপ-পুলিশ কমিশনার (সাপ্লাই এন্ড লজিস্টিকস) মোঃ জুলফিকার আলি হায়দার, উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) মোঃ মোকতার হোসেন পিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মোঃ জাকির হোসেন মজুমদার পিপিএম, উপ-পুলিশ কমিশনার (নগর বিশেষ শাখা) এসএম তানভীর আরাফাত বিপিএম-বার, উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর (অতিঃ দায়িত্ব গোয়েন্দা বিভাগ) মোঃ মনজুর রহমান পিপিএম- বার, উপ-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অপারেশন এন্ড প্রসিকিউশন) খাঁন মোহাম্মদ আবু নাসের, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (সদরদপ্তর) মোঃ রেজাউল করিম, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) রুনা লায়লা, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ)মোঃ ফজলুল করীম, অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (নগর গোয়েন্দা) শেখ মোহাম্মদ সেলিম,অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (পিএমটি এন্ড ফোর্স) ফারুকসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।