বরিশালের পথে পথে খ্যাইটার দোকান, ক্রেতার দেখা নাই

শেয়ার করুনঃ

শামীম আহমেদ :: আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাকি পবিত্র ঈদুল আজাহ’র যাকে আমরা কোরবানির ঈদ বলে থাকি। পশু জবাহের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ কোরবানী পালন করে থাকে। তাই কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে হালাল পশু জবাহের পর মাংস কাটার জন্য কাঠের গুড়ির (খ্যাইটা) বেশ প্রয়োজন। আর এই কোরবানীকে কেন্দ্র করে বরিশাল নগরে সেই কাঠের গুড়ির ব্যবসা পথে পান্তে গড়ে উঠেছে। যদিও আর কয়েক ঘন্টা পরই ঈদুল আজাহা নামাজ শেষে আল­াহ’র নামে পশু কোরবানী দেয়ার প্রতিযোগীতা শুরু হয়ে যায় পাড়া মহল­া’র বাসাবাড়ির ভিতর। মানুষের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ক্ষুদ্র ও মৌসুমি ব্যবসায়ীরা এসব গুড়ির পসরা নিয়ে বসেছেন নগরের বিভিন্ন এলাকার রাস্তায়।

এদিকে নগরের হাটখোলা, পোর্ট রোড, চৌমাথা বাজার, কাশিপুর বাজার, বাংলা বাজার, ভাটিখানা, নাজিরা পোলসহ বেশ কয়েকটি বাজারেও গুড়ির ব্যবসার দোকান পেতে বসলেও এখন পর্যন্ত তেমন বেচা-বিক্রি বাড়েনি। বিভিন্ন মাপের বিভিন্ন দামের এসব গুড়ি সাজিয়ে রাখা হয়েছে। আর এসব গুড়ি ২৫০ টাকা থেকে ” থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ৫শ’ ও ১ হাজার টাকা করে বিক্রি করা হচ্ছে।

নগরের হাটখোলা বাজার এলাকায় মাংস কাটার গুড়ি কিনতে আসা মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, ঈদের দিন গরু জবাহের পর মাংস কাটার জন্য এই খ্যাইটা’র খুব প্রয়োজন। তাই বাজারে কিনতে আসলাম।

মাংস কাটার গুড়ি বিক্রেতা নাজিরপুলের আনিসুর রহমান বলেন, গাছের গুড়ির মধ্যে সবচেয়ে তেঁতুল গাছের গুড়ি অত্যন্ত শক্ত ও মজবুত। তাই ক্রেতাদের কাছে তেঁতুল গাছের গুড়ি বেশ কদর। এবার ১০০ পিস গুড়ি এনে ছিলাম কিছু বিক্রি হয়েছে আর কয়েকটি আছে তবে গতবারের চেয়ে এবার বিক্রি এখন পর্যন্ত কম।

অপর ব্যবসায়ী মোঃ আবুল হোসেন, বলেন গত কোরবানীতে প্রায় ২০ হাজারের মক পশু কোরবানী হয়েছে। এবার ৪ হাজার পশু কোরবানী হবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে যতেষ্ট সন্দ্রেহ। তাই এখন পর্যন্ত তেমন ক্রেতার চাহিদা দেখা যাচ্ছে না। তবে যেহেতু এখনো সময় আছে শেষ বেলায় হয়ত বিক্রি বাড়তে পারে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কোরবানি ঈদ আসলেই খ্যাইটা ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন করাতকল (কাঠ কাটা মিল) থেকে খ্যাইটা বানানোর উপযোগী তেঁতুল কাঠের গুঁড়ি কেনেন। এরপর সেগুলো মাংস কাটার উপযোগী করে নির্দিষ্ট মাপে টুকরা করে খ্যাইটা তৈরি করেন। এরপর বড় ছোট খ্যাইটা বিভিন্ন দামে বিক্রি করেন। এতে প্রতি খ্যাইটা থেকে ৩০ থেকে ৫০ টাক লাভ হয়।

নগরের বড় বাজার এলাকার গুড়ি বিক্রেতা নয়ন জানায়, যে কোন ধরনের মাংশ কাটার জন্য তেঁতুল ও বিভিন্ন গাছের কাঠের গুড়ির কোন বিকল্প নাই। অন্য কাঠের তৈরি গুড়িতে মাংশ কাটলে দা বা ছুরির আঘাত তেমন সহ্য করতে পারে না। ফলে কাঠ থেকে ক্ষুদ্র ক্ষৃক্ষ টুকরা উঠে মাংসে লেগে থাকে। যা পরে মাংস থেকে ছড়াতে বেশ বেগ পেতে হয়। কিন্তু তেঁতুল গাছের কাঠের গুড়ি খুব শক্ত ও মজবুত হওয়ায় সাধারণত মাংশ নষ্ট বা লাগেনা যদিও বা লাগে তা খুবই কম। তাই কোরবানির পশুর মাংস কাটতে তেঁতুল কাঠের খ্যাইটা বেশি কিনেন ক্রেতারা। তাইতো সারা বছরই কসাইরা তেঁতুল কাঠের গুড়ি ব্যবহার করেন বলেও জানান তিনি।

এছাড়া মাংশ কাটার পর প্রয়োজন হয় হোগলার পাশাপাশি বিভিন্ন মোড়ে মৌসুমী হোগলা ব্যবসায়ীরা বসে পড়েছে হোগলা নিয়ে।

এখানে দেখা যায় বড় সাইজের হোগলার দাম ২শ থেকে তশ’ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। হোগলার ব্যবসায়ীরা বলেন বর্তমানে হোগলা পাতার দাম এবং বোনার মজুরী দিয়ে তেমন একটা ব্যবসা থাকে না।

আর এবারতো এখন পর্যন্ত তেমন ক্রেতা দেখতে পাইতেছি না। গতবার এইরকম সময়ে বিক্রি করে দম ফালাবার সময় পাই নাই।