বরিশালে কুড়িয়ে পাওয়া বৃদ্ধ’র দায়িত্ব নিলেন ওসি নুরুল ইসলাম

শেয়ার করুনঃ

শামীম আহমেদ :: ভোলা জেলা সদর উপজেলা ভেদুরিয়া ব্যাংগের হাটের মৃত মজিদ আলির পুত্র বৃদ্ধ সেকেন্দার আলি (৭৫)কে রাস্তা থেকে কুড়িয়ে পাওয়া মানুষটির হাসপাতালে ভর্তি করা ও চিকিৎসাসহ পরবর্তী তার নিজস্ব স্থানে ফিরিয়ে দেয়া পর্যন্ত সকল ধরনের খরচের দায়িত্ব নিজ কাধে নিলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নুরুল ইসলাম। এতে করে একটি নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করার মাধ্যমে এই সমাজের মানুষের বিবেককে জাগ্রত করে স্মরণ করে দিল।

জানা গেছে- আজ বৃহস্পতিবার (১৩ আগস্ট) বেলা সোয়া ২টার দিকে থানায় কল করে জানানো হয় এক বৃদ্ধ অসহায় রাস্তায় পড়ে কান্নকাটি করছে। এ সংবাদ পেয়ে ওসি নুরুল ইসলাম দ্রুত এসআই রিয়াজুল ইসলামসহ কয়েকজন ফোর্স পাঠিয়ে দেন। এসআই রিয়াজুল ইসলাম নগরীর বিএম কলেজ অ্যাভিনিউ লেচু শাহ্ সড়কে সন্ধান করে বৃদ্ধ সেকেন্দার আলি (৭৫)কে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়।

এসময় সেকেন্দার আলিকে ওসি নুরুল ইসলাম তার পরিচয় জানার জন্য কয়েকবার কথা বলেন, এসময় বৃদ্ধ সেকেন্দার তার বাড়ির ঠিকানার তথ্য দেন। এক পর্যায়ে তার বাড়িতে কে কে আছে জানতে চাইলে ছেলের নাম নজরুল বলেই দু’চোখ দিয়ে অঝড়ে কান্নাকাটি করতে থাকে। তিনি সব কথা অকপটে বললেও যখনই ছেলের কথা জিজ্ঞাসা করা হয় তখনই দু’ চোখ দিয়ে ঝড়তে থাকে পানি। সেকেন্দারের এই কান্না দেখে সকল পুলিশ অফিসার ও পুলিশ সদস্যরা মর্মাহত হয়ে পড়ে। সেকেন্দারকে উদ্ধার করার সময় একটি পলিথিনের ভিতর খুচরা কয়েন টাকাসহ বিভিন্ন কাগজের নোট মিলিয়ে ২ হাজার ৫শত টাকা পাওয়া যায় তার কাছে। পড়ে বৃদ্ধ সেকেন্দার আলিকে পুলিশ অফিসার দিয়ে তার শারিরীক সুস্থতার জন্য শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করার ব্যবস্থা করেন।

এসময় ওসি নুরুল ইসলাম প্রতিবেদককে বলেন, আগে মানুষটিকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করি। তারপর এর বাড়ির সন্ধান করে দেখা হবে। আর যতদিন না এর নির্দিষ্ট একটি স্থানে তুলে না দেওয়া পর্যন্ত এর যাবতীয় দেখাশুনা ব্যায়ভার আল্ল­াহ সহায় হলে আমি বহন করব।

ওসি নুরুল ইসলাম আরো বলেন- তার কাছে যেহেতু অনেকগুলো টাকা পাওয়া গেছে মনে হয় তিনি ভিক্ষা ভিত্তি পেশায় জড়িত থাকতে পারে বলে প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে ছেলের কথা জিজ্ঞাসা করা হলে কান্নাকাটি করে সেখানে মনে হয় ছেলেসহ তার পরিবার বরিশালে এনে ফেলে দিয়ে যেতে পারে। যাক আগে একে স্বাভাবিক সুস্থ করি। তারপর না হয় একে কিভাবে বাঁচিয়ে রাখা যায় সে চিন্তা ভাবনা করব।

ইতিপূর্বেও তিনি এই বিশ্ব মহামারী করোনাকালে বেশ কয়েকজনকে এ ধরনের সেবা দিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে প্রশংসিত হয়েছে। সেই সাথে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খানের সুন্দর আদর্শ ও নির্দেশের বানি পালন করে বরিশালের পুলিশ সদস্যদের ভাবমূর্তি উজ্জল করেছে। অন্যদিকে তিনি বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকার কাউনিয়া থানা কর্মরত থাকাকালীন সে এলাকার আইন শৃঙ্খলা উন্নয়নের চিহ্ন রেখে এসেছেন। এখন বর্তমানে মডেল থানায় যোগদান করে সকল অফিসারদের সঙ্গি-সাথী বানিয়ে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে সক্ষমতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন।