পড়াশোনার পাশাপাশি দুই তরুণের ডেলিভারি সার্ভিস

শেয়ার করুনঃ

অনলাইন ডেস্ক:: ‘আঠারো বছর বয়সের নেই ভয়/ পদাঘাতে চায় ভাঙতে পাথর বাধা,/ এ বয়সে কেউ মাথা নোয়াবার নয়।’ কবি সুকান্তের কবিতার মত আঠারো বছর বয়সে করোনা মহামারীর কাছে মাথা নত করেননি তারা। তাই তো দুই তরুণ গড়ে তুলেছেন পণ্য ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান। তরুণদের এমন উদ্যোগের গল্প শোনাচ্ছেন শেখ নাসির উদ্দিন—

করোনা মহামারীর সময় সবাই যখন ঘরবন্দি; তখন অনলাইনে কেনাকাটা বেড়ে যায়। সেই সাথে জন্ম নেয় নতুন নতুন অনলাইন শপ। কিন্তু সেই হারে সঠিক সময়ে গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার মতো ডেলিভারি প্রতিষ্ঠান বাড়েনি। অনলাইনে ক্রেতা-বিক্রেতা পণ্য নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে মাত্র এইচএসসি পাস করা তরুণ জুবায়ের হাসান ভাবেন, সঠিক সময়ে বিক্রেতার কাছ থেকে ক্রেতার হাতে পণ্য পৌঁছে দেবেন।

কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন একজন। আর তাই সঙ্গী হিসাবে বেছে নিলেন শরীয়তপুরের নড়িয়া সরকারি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী কে এম ধ্রুবকে। এভাবেই গড়ে ওঠে একঝাঁক তরুণের ডেলিভারি সার্ভিস প্রতিষ্ঠান ‘ফার্স্ট ফেইথ’।

তরুণ উদ্যোক্তা জুবায়ের হাসান বলেন, ‘আমার আশেপাশের অনেকে ঘরবন্দি সময়ে অনলাইনে ব্যবসা খুলে বসেন। তখন থেকেই ইচ্ছে ছিল আমিও কিছু একটা করি। অনেকের সাথে কথা বললাম। তারাই জানালেন, ঢাকা শহরে পণ্য ডেলিভারি করার মত নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান পাচ্ছেন না। পেলেও সঠিক সময়ে গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছাতে পারছেন না। তাই ভাবলাম, যেহেতু জনবল আছে; তাই একটি ডেলিভারি সার্ভিস খুলে ফেলি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাই বয়সে তরুণ। বাধাহীনভাবে করোনা মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমাদের ছুটে চলা। এ বছরের জুলাইয়ে আমাদের যাত্রা শুরু। লক্ষ্য হলো- কম মূল্যে সঠিক সময়ে গ্রাহকের কাছে পণ্য পৌঁছে দেওয়া। এখন পুরো ঢাকা শহরে আমরা পণ্য পৌঁছে দিচ্ছি। পরিবারের সহযোগিতা ছিল বলেই আমরা আত্মপ্রকাশ করতে পেরেছি। সবচেয়ে বড় আত্মতৃপ্তি হলো- আমার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। পাশাপাশি অনেক তরুণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পেরেছি।’

আরেক উদ্যোক্তা কে এম ধ্রুব বলেন, ‘তথ্যপ্রযুক্তি আমাদের জীবন-যাপনকে সহজ করেছে। প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে আমরা অনেক কিছু করতে পারি। জুবায়ের ভাই আমাকে তার আইডিয়া জানানোর পরই আমি রাজি হয়ে যাই। আমি শরীয়তপুর থেকে ঘরে বসেই এ প্রতিষ্ঠানের অনলাইনের সব কাজ করি। যা কেবল প্রযুক্তির জন্যই সম্ভব হয়েছে। এরকম উদ্যোগের একজন হতে পেরে আমি আনন্দিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা সাইকেলের মাধ্যমে যথাসময়ে পণ্য পৌঁছে দেয়। আমরা এ প্রতিষ্ঠানকে শুধু ঢাকা শহরে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। ভবিষ্যতে পর্যায়ক্রমে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।’