বার্সা ছাড়ার কথা শুনে কেঁদে দিয়েছিলেন মেসির স্ত্রী

শেয়ার করুনঃ

নিজের প্রিয় ক্লাব বার্সেলোনা ছাড়তে চেয়েছিলেন লিওনেল মেসি। নিজেই সেই ইচ্ছের কথা প্রকাশ করেছিলেন। বলা যায়, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিতে এক পা দিয়েই ফেলেছিলেন বার্সার আর্জেন্টাইন অধিনায়ক।

কিন্তু রিলিজ ক্লজ জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত তীব্র ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও মেসি বার্সা ছাড়তে পারেননি। থেকে যেতে হচ্ছে আরও এক বছরের জন্য। অনিচ্ছা সত্ত্বেও আরও এক বছর বার্সার জার্সি গায়ে খেলবেন মেসি।

তবে, মেসির বার্সা ছাড়ার ইচ্ছাটা কেন যেন শত্রুরাও মানতে পারেননি। রিয়াল মাদ্রিদের অধিনায়ক সার্জিও রামোস চাননি মেসি বার্সা ছেড়ে যাক। তাতে অন্তত স্প্যানিশ লা লিগার জৌলুসটা টিকে থাকবে।

এ তো গেলো শত্রুর কথা। কিন্তু মেসির ঘরের অবস্থা কি হয়েছিল? মেসি নিজেই জানালেন, তার বার্সা ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানার পর কেঁদে দিয়েছিলেন তার স্ত্রী আনতোনেল্লা রোকোজ্জু।

প্রায় ২০টি বছর কাটিয়েছেন তিনি বার্সেলোনায়। ২০০০ সালে সেই ১৩ বছর বয়সে বার্সেলোনায় এসে ক্লাবটির একাডেমি লা মাসিয়ায় জীবন শুরু করেছিলেন তিনি। এরপর দেখতে দেখতে ২০টি বছর কেটে গেছে। এতগুলো বছর পর এই শহরে এবং এখানকার আলো-বাতাসে বেড়ে ওঠার কারণে বার্সেলোনাকে জীবনের মতোই ভালোবেসে ফেলেছেন মেসি এবং তার পরিবারের সদস্যরা।

এ কারণে হঠাৎ করে মেসির বার্সা ছাড়ার খবর শোনার পর তার পরিবারের সদস্যদের বিষয়টা মানতে বেশ কষ্ট হয়েছিল। বার্সেলোনায় মেসির পরিবারের সদস্যরা হলেন তার স্ত্রী আনতোনেল্লা রোকুজ্জো এবং তিন ছেলে থিয়াগো, মাতেও এবং সিরো।

বার্সেলোনা ছেড়ে গেলেও মেসি তার পরিবারকে এই মুহূর্তেই ইংল্যান্ড নিয়ে যেতে পারতেন না হয়তো। এ কারণেই তার পরিবারের সদস্যদের কষ্টটা ছিল আরও বেশি। মেসি নিজেই বলেন, ‘যখন আমি আমার ইচ্ছার কথা পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছিলাম, বললাম স্ত্রী এবং সন্তানদের ছেড়ে দুরে যেতে হবে, তখন খুবই হৃদয়বিদারক একটা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল।’

মেসি জানান, সবাই তখন কাঁদতে শুরু করে দিয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমার পুরো পরিবার কান্না শুরু করে দিয়েছিল। আমার বাচ্চারা তো কোনোভাবেই বার্সেলোনা ছাড়তে রাজি নয়। এমনকি তারা কোনোভাবেই স্কুল পরিবর্তন করতে রাজি নয়।’

মেসি আরও বলেন, ‘তবে পরে আমি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করলাম। আমি চাই সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্রতিযোগিতা করার। শিরোপা জেতার এবং চ্যাম্পিয়ন্স লিগে লড়াই করার। আপনি হয়তো জিততে পারবেন কিংবা পারবেন না- কারণ এই প্রতিযোগিতাটা বেশ কঠিন। কিন্তু আপনাকে তো লড়াই করতেই হবে।’

পরিবারের সদস্যদের তখনকার অবস্থা নিয়ে মেসি বলেন, ‘মাতেও এখনও অনেক ছোট। বার্সেলোনায় থাকা কিংবা অন্য কোথাও যাওয়ার বিষয়ে এখনও সে কিছু বোঝে না। আরও কয়েক বছর সময় লাগবে বুঝতে। কিন্তু থিয়াগো সবার বড়। সে কিছু বোঝে। টিভিতে কিছু শুনেছে সে। এ কারণে বাসায় আসার পরই সে জিজ্ঞাসা করে বসে। আমি চাইতি তাকে কিছু জানাতে। বিশেষ করে বাধ্য হয়ে বার্সেলোনা ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টা। নতুন কোনো জায়গায় থাকা কিংবা নতুন কোনো স্কুল এবং নতুন বন্ধু’র বিষয়ে। তবুও সে কান্না শুরু করে দিয়েছিল এবং আমাকে বলতে শুরু করে, না যাওয়ার জন্য। আমি তাকে কি জবাব দেবো বুঝতে পারছিলাম না। এটা ছিল বেশ কঠিন আমার জন্য। আমার ছেলে, আমার পরিবার- সবাই বেড়ে উঠেছে এখানেই। এই জায়গা ছেড়ে যাওয়ার মধ্যে কোনো ভুল ছিল না। আমার এটা প্রয়োজন ছিল।’

স্ত্রী রোকুজ্জোর কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার স্ত্রী, তার হৃদয়ের সব আবেগ, সমর্থন সব কিছুই ছিল আমার সঙ্গে। সে সব সময়ই আমার সঙ্গী হিসেবে রয়েছে।’