তীব্র গণআন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান মান্নার

শেয়ার করুনঃ

অনলাইন ডেস্ক :: নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, দেশকে, দেশের মানুষকে, অর্থনীতিতে বাঁচাতে আমি সকল বিরোধী রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তীব্র গণ আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বান জানাচ্ছি।

সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।

মান্না বলেন, নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকায় মসজিদে অগ্নি দুর্ঘটনায় মৃত এবং আহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। মৃত ব্যক্তিদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।

তিনি বলেন, এটিকে দুর্ঘটনা বলা যায় না। গ্যাস লিকেজের ব্যাপারে মসজিদ কর্তৃপক্ষ তিতাসকে জানানোর পরও ৫০ হাজার টাকা ঘুষ না পাওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এখন সরকারের পক্ষ থেকে তিতাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে লোক দেখানো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিতাসের এই অব্যবস্থাপনার দায় কি বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় এড়াতে পারে? এই দায় কি সরকারের নয়? যখনই কোনো অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা সামনে আসে, তখনই কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘাড়ে সেই দায় চাপিয়ে সরকারের ব্যর্থতা আড়ালের চেষ্টা করা হয়।

মান্না বলেন, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, এই মসজিদ অবৈধ। ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর এতদিনে এসে তিনি এই মসজিদকে অবৈধ বলছেন। এতদিন কোথায় ছিলেন তিনি? মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির নির্বাচনে গঠিত অবৈধ সরকারের অবৈধ প্রতিমন্ত্রীর মুখে একটি ধর্মীয় উপাসনালয় নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।

তিনি বলেন, ঘটনার তদন্তে গঠিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দল বলেছে, মসজিদের ৬টি এসির একটিও বিস্ফোরিত হয়নি। আগুন লাগার ঘটনাও ঘটেনি। বরং মাটির নিচ থেকে তিতাসের গ্যাস লাইনের লিকেজ থেকে মিথেন গ্যাস পুরো মসজিদকে একটা গ্যাস চেম্বারে পরিণত করেছিল। অথচ জাতীয় সংসদে আনা শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বারবার অপরিকল্পিতভাবে এসি লাগানোর কথা বলেছেন। মসজিদ নির্মাণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন না নেয়ার কথা বলেছেন। এই কর্তৃপক্ষের কাজ কী? আর তাদের নিয়ন্ত্রক হিসেবে সরকারের কাজ কী? তারা কী রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন?

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, সরকার নিজেদের দায় এড়াতে এবং অযোগ্য, দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের রক্ষা করতে এই দুর্ঘটনাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছে। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। কিন্তু রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর দায় তো তাদের নিতে হবে।

আওয়ামী লীগের সাবেক এই নেতা বলেন, আমি আগেও অনেকবার বলেছি, এই সরকারের হাতে দেশ নিরাপদ নয়; দেশের মানুষের জীবন নিরাপদ নয়। এই ২৬ জনের মৃত্যু সেটা আরেকবার প্রমাণ করল। এই সরকার করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এবং করোনা পরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতি বাঁচাতে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এই সরকারের হাতে দেশের অর্থনীতিও নিরাপদ নয়। গুম-খুন, মেজর সিনহার মতো অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যকে হত্যা, মসজিদে পুড়ে মানুষের মৃত্যু, সরকারি দলের নেতাকর্মীদের হাতে সরকারি কর্মকর্তার আহত হওয়া- এই সবকিছু থেকে মুক্তি পেতে জনগণকে এই অবৈধ, স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট, সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণের সরকার, জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।