মঠবাড়িয়ায় গৃহবধূকে খুন করে হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যায় স্বজনরা!

শেয়ার করুনঃ

মঠবাড়িয়া প্রতিনিধি :: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলায় শাকিলা আক্তার নামে এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে নির্মমভাবে হত্যা করে আত্মহত্যার অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে। নিহত শাকিলা পিরোজপুর জেলার ভান্ডারিয়া উপজেলার হরিনপালা গ্রামের মোঃ কাইউম হাওলাদারের মেয়ে । গত ২৯ জুন মঠবাড়িয়া থানার অন্তর্গত মিরুখালী রোড ভাই বোন ভিলা ৭ নং ওয়ার্ড মঠবাড়িয়া পৌরসভার আঃ মান্নান ঘরামীর বসতঘরে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে।

অভিযোগে জানা গেছে, গত ২০১৮ সালের ২৬ জানুয়ারি শাকিলার সঙ্গে মঠবাড়িয়া পৌর শহরের হাসান ঘরামীর বিয়ে হয়। বিবাহের ১ বছর যেতে না যেতেই ওই নববধূর ওপর শুরু হয় নির্যাতন। এরই ধারাবাহিকতায় একপর্যায়ে আসতে থাকে জীবনে মেরে ফেলার হুমকি। আর এ হুমকির মধ্যেই শাকিলাকে আটক করে রাখা হয়েছে এমন খবরে শাকিলার বাবা থানা পুলিশের সহযোগিতায় হাসান ঘরামীর পৌর শহরের ওই বাসা থেকে উদ্ধার করে আবার স্হানীয় গন্যমান্যদের মধ্যস্থতায় আপোষ রফা করেন। কিন্তু কন্যা সন্তান জন্মের পর নির্যাতন আরো বাড়িয়ে দিয়ে ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজন। টাকা না দিলে খুন করারও হুমকি দেয় তারা। একপর্যায়ে ঘটনার তারিখ ও সময় যৌতুকের দাবিতে ভিকটিম শাকিলাকে মারধর ও শ্বাসরোধে হত্যা করে আসামীরা নিহতের লাশ মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় নিহতের পিতা ৬ জনকে আসামী করে মঠবাড়িয়া থানায় নিয়মিত মামলা রুজু করার জন্য পুলিশ সুপার পিরোজপুরের নিকট ৫ জুলাই লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ সুপার উক্ত অভিযোগটি মঠবাড়িয়া থানায় অগ্রগামী করেন।

ইতোপূর্বেও একাধিক আসামীদের বিরুদ্ধেে তাতে একটি কক্ষে আটকে রেখে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ রয়েছে। থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধার করে।

২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর মারধরের ঘটনায় কোথাও লিখিত অভিযোগ না দিলেও মেয়েকে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে চিকিৎসা করান বাবা। ব্যবস্হা পত্রে ফিজিক্যাল এ্যাসাল্ট উল্লেখ আছে।

এদিকে নিহতের বাবা কাইউম হাওলাদার ২০১৮ সালের ১১ মার্চ ভবিষ্যৎ জটিলতা এড়াতে বিজ্ঞ নোটারী পাবলিকের কার্যালয় পিরোজপুরে একটি এফডেভিড সম্পাদন করেন। এফিডেভিডে বিবাহের দেনমোহরনা ধার্য্যকৃত ১০ লক্ষ টাকা সম্যক বাকি রাখা, জামাতা হাসান ঘরামী ১০ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি, বিভিন্ন সময় হুমকি, কাজীর বিরুদ্ধে সইমোহর নিয়ে স্বজনপ্রীতি ও টালবাহানার অভিযোগ, মেয়ের মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন তিনি।

নিহতের বাবা কাইউম অভিযোগ করে বলেন, গত ২৯ জুন আমার মেয়েকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আত্মহত্যার অপপ্রচার চালানো হয়। আমরা ওইদিন বিকালে খবর পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশ নিয়ে মঠবাড়িয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে লাশের গায়ে মারধরের চিহ্ন দেখতে পাই। আমরা হাসপাতালে যাওয়ার আগেই আসামীরা লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। মামলার ভয়ে তারা হত্যাকাণ্ডকে আত্মহত্যা বলে অপপ্রচার করতে থাকে।

এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু জাফর মো মাসুদুজ্জামান জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”