উজিরপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের দখলে ভূমিহীনদের জমি, নদী দখল করে ভবন নির্মাণ

শেয়ার করুনঃ

উজিরপুর প্রতিনিধিঃ বরিশালের উজিরপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অসহায় ভূমিহীনদের জমি ও নদী ভরাট করে পাকা ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এব্যাপারে প্রকৃত জমির মালিকরা আদালতে মামলা দায়ের করেছে। উপজেলার শোলক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ কাজী হুমায়ুন কবির ও তার ভাতিজা লিটু কাজীর বিরুদ্ধে ওই এলাকার নুরুল হক হাওলাদার বাদী হয়ে বরিশাল অতিরিক্ত জেলা মেজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছে।

মামলা ও ভূক্তভোগী পরিবার সুত্রে জানা যায়- ৩৪ নং ধামুরা মৌজায় এস.এ ৪৪২ নং খতিয়ানের, এস.এ ২৬৬৭,২৬৭০ নং দাগে ৭ শতাংশ জমি পৈত্রিক ও রেকডিও মূলে মালিক নুরুল হক হাওলাদার গংরা দীর্ঘদিন যাবৎ ভোগদখল করে আসছে। হতদরিদ্র পরিবারদের উক্ত জমি কয়েক বছর ধরে নদী গর্ভে অনেকাংশ বিলিন হয়ে যায়। ওই জমি বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকী দিয়ে দখলের পায়তারা চালিয়ে আসছে প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান বাহিনী। এরই ধারাবাহিকতায় ২৮ আগষ্ট সকাল ৯ টায় ইউপি চেয়ারম্যান কাজী হুমায়ুন কবির ও তার ভাতিজা লিটু কাজী ২০/২৫ জন ভারাটে সন্ত্রাসী নিয়ে প্রকাশ্যে দেশীয় ধারালো অস্ত্র,রাম দা,চাপাতি, লোহার রড হাতে নিয়ে হতদরিদ্র পরিবারদের ভোগদখলীয় জমি এবং নদীতে বালু ভরাট করে জোরপূর্বক দখল করে পাকা ভবন নির্মানের কার্যক্রম শুরু করে। ইউপি চেয়ারম্যানের ক্ষমতার দাপটে প্রতিবাদ করতে সাহস না পেয়ে হতাশ হয়ে পরেছে অসহায় পরিবাররা। এমনকী অর্ধশত পরিবারের গোসল ও পানি ব্যবহারের একমাত্র ঘাটলাটি ভেঙ্গে ফেলেছে তারা। এছাড়াও একই এলাকার ফরিদ হোসেন হাওলাদারের স্ত্রী শিউলি বেগমের বিরুদ্ধেও নদী ভরাট করে পাকা ভবন নির্মান করার অভিযোগ রয়েছে।

এ ব্যপারে ১১ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বেলা ১১ টায় বাদী নুরুল হক হাওলাদার ও ভুক্তভোগী ৭৫ বছরের বৃদ্ধ মোজাম্মেল হক ভান্ডারী ,মাসুদ হাওলাদার(৫৫), গঞ্জর আলি হাওলাদার(৭০), বিল্লাল হোসেন(৬৩), বাবুল হাওলাদার(৫০), ফজুলল হক হাওলাদার(৫০), মিলন হাওলাদার, বায়জিদ হাওলাদার, খালেক মাহাবুব, খালেদ মামুন, সাগর হাওলাদার, সোহাগ হাওলাদার, মিনারা বেগম, এসমাতআরা বেগম, খালেদা আক্তার, রিজিয়া বেগম(৮০), সোনিয়া আক্তার (২০),রওশন আরা(৫০), হাসিনা বেগম(৪৫)সহ শত শত নারী ও পুরুষরা ওই ভূমিদস্যু প্রভাবশালী চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্ণীতি,অনিয়ম ও অন্যের জমি ক্ষমতার দাপটে দখল করাসহ একাধিক অভিযোগ করেন এবং ঘটনাস্থল ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে ভূমিদস্যুদের কবল থেকে ভূমিহীনদের ও প্রকৃত মালিকদের ভোগদখলীয় জমি দখল মুক্ত রাখার দাবীতে প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান কাজী হুমায়ুন কবির ও তার ভাতিজা লিটু কাজীর বিচারের দাবী জানিয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন।

অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান কাজী হুমায়ুন কবির জানান, ২/৩ বছর পূর্বে ভূমিহীনদের দেয়া শোলক গ্রামের রহিম শরীফসহ ২ জনের কাছ থেকে উক্ত জমি ক্রয় করে ভোগদখল করছেন।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জয়দেব চক্রবর্তী জানান, ভূমিহীনদের বন্দবস্ত দেওয়া কোন জমি ক্রয়-বিক্রয় আইন সম্মত নয় এবং খাল দখল করে ভরাট করা সম্পুর্ণ বেআইনী। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।