বরিশালে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে খাসজমি দখল করলেন ইউপি চেয়ারম্যান

শেয়ার করুনঃ

উজিরপুর (বরিশাল) প্রতিনিধি :: ভূমিহীন কয়েকটি পরিবারের নামে বন্দোবস্ত থাকা খাসজমি দখল করে ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী হুমায়ুন কবির ও তার ভাতিজা লিটু কাজীর বিরুদ্ধে। পাশাপাশি ওই জমি সংলগ্ন ধামুরা খালে মাটি ও বালু ফেলে ভরাট করে কয়েক শতাংশ জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে চেয়ারম্যান ও তার ভাতিজার বিরুদ্ধে।

খাসজমি বন্দোবস্ত পাওয়া ভূমিহীন মোজাম্মেল হক ভান্ডারী (৭৫), মাসুদ হাওলাদার (৫৫), গঞ্জর আলি হাওলাদার (৭০), বিল্লাল হোসেন (৬৩), বাবুল হাওলাদার (৫০) ও ফজুলল হক হাওলাদার (৫০) জানান, উপজেলার শোলক ইউনিয়নের ধমুরা বন্দর সংলগ্ন খালপাড় এলাকায় বন্দোবস্ত পাওয়া খাসজমিতে তারা দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন। বছর খানেক আগে থেকে ওই খাস জমি দখলের চেষ্টা করে আসছেন চেয়ারম্যান কাজী হুমায়ুন কবির ও তার ভাতিজা লিটু কাজী। কয়েকবার তারা লোকজন নিয়ে জমি দখলের চেষ্টাও চালান। তবে স্থানীয় লোকজনের বাধার মুখে তারা দখল নিতে ব্যর্থ হন। চেয়ারম্যান কাজী হুমায়ুন কবির ও তার ভাতিজা লিটু কাজী এরপর এলাকায় বলে বেড়ান ৭ শতাংশ খাস জামি তারা ভূমিহীনদের কাছ থেকে টাকা দিয়ে কিনেছেন।

ভূমিহীন মোজাম্মেল হক ভান্ডারী ও মাসুদ হাওলাদার বলেন, গত ২৮ আগস্ট রাতের আঁধারে হুমায়ুন কবির ও তার ভাতিজা লিটু কাজী ২০-২৫ জন ভাড়াটে সন্ত্রাসী নিয়ে এসে ৭ শতাংশ খাস জামি দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের হাতে রামদা, চাপাতি, লোহার রড থাকায় তখন স্থানীয় কেউ বাধা দিতে সাহস পায়নি। এরপর সেখানে দোতলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। শধু তাই নয়, খালের পানি ব্যবহারের জন্য একটি ঘাট ছিল যেখানে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক মানুষ গোসল করতেন। ঘাটটি কাপড় ধোয়াসহ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জমি দখলের পর ওই ঘাটটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে।

মোজাম্মেল হক ভান্ডারী ও মাসুদ হাওলাদার বলেন, খাস জমি দখলের ঘটনায় তারা সম্প্রতি চেয়ারম্যান ও তার ভাতিজার বিরুদ্ধে বরিশাল অতিরিক্ত জেলা মেজিস্ট্রেট (এডিএম) আদালতে মামলা করেছেন। তারা ন্যায় বিচারের অপেক্ষায় আছেন।

শোলক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী হুমায়ুন কবির বলেন, ধমুরা বন্দর সংলগ্ন খালপাড় এলাকায় রহিম শরীফসহ ২ জন ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি (কাজী হুমায়ুন কবির) ও তার ভাতিজা ৭ শতাংশ জমি কিনেছেন। জমির দলিল পত্র তার কছে রক্ষিত আছে। সামনে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন, এ কারণে একটি মহল ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। ধমুরা বন্দর সংলগ্ন খালপাড় এলাকার কয়েকজনকে দিয়ে তার বিরুদ্ধে জমি দখলের ঘটনা সাজিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছেন।

উপজেলার ভূমি কর্মকর্তা (এসিল্যান্ড) জয়দেব চক্রবর্তী জানান, ভূমিহীনদের বন্দোবস্ত দেয়া কোনো জমি ক্রয়-বিক্রয় আইনসম্মত নয়। তাছাড়া খালের সম্পত্তি সরকারি। এই সম্পত্তি কী করে দখল হয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।