বরিশালে শিক্ষককে কান ধরিয়ে উঠ-বস করানোর অভিযোগে মামলা

শেয়ার করুনঃ

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালে এক শিক্ষককে কান ধরিয়ে উঠ-বস করানোর অভিযোগে একজনের নামসহ সাত-আটজন অজ্ঞাত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

কোতোয়ালি থানার ওসি নূরুল ইসলাম জানান, বরিশাল শহরের রূপাতলী এলাকার জমজম নার্সিং কলেজের সাবেক শিক্ষক মিজানুর রহমান সজল মঙ্গলবার তাদের থানায় এই মামলা করেন।

ওসি বলেন, সম্প্রতি একটি ভিডিও ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এক মিনিট সাত সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শিক্ষক সজল কান ধরে দাঁড়িয়ে আছেন। পাশ থেকে একজন তাকে ‘ছাত্রীকে বেশি নম্বর পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে অবৈধ প্রস্তাব না দেওয়ার’ শপথ করান। পাশপাশি আরও একটি ছবিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। তাতে দেখা যায়, বোরকা পরা এক নারীর পা ধরে বসে আছেন শিক্ষক সজল।

ওসি বলেন, গত ২৫ অগাস্ট এ ঘটনা ঘটলেও লাঞ্ছনার শিকার মিজানুর রহমান সজল পুলিশকে অবহিত করেননি। তিনি বরিশাল থেকে গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফলে চলে যান। মঙ্গলবার তাকে থানায় ডেকে মামলা নেওয়া হয়। মামলায় ইমতিয়াজ ইমন নামে একজনসহ আরও সাত-আটজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানান ওসি।

লাঞ্ছনার শিকার শিক্ষক সজলের অভিযোগ, ২০১৮ সালে চাকরি ছাড়ার আগে ওই কলেজের শিক্ষার্থী ইমন ও তার স্ত্রী মনিরা আক্তারের সঙ্গে সজলের বিরোধ বাধে।

“তারা শিক্ষকদের সম্মান দিতেন না। পড়াশোনায় অমনোযোগী এবং ঠিকভাবে ক্লাস না করেও তারা পরীক্ষায় ভাল নম্বর চাইতেন। তা দিতে রাজি না হওয়ায় ইমন আমার ওপর ক্ষিপ্ত হন। গত ২৫ অগাস্ট দুপুরে বরিশাল শহরের হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকা থেকে আমাকে অপহরণ করেন ইমনসহ কয়েকজন। প্রথমে অক্সফোর্ড মিশন রোড ও পরে গোরস্থান রোড এলাকায় নিয়ে কয়েক দফায় মারধর করা হয় আমাকে। এরপর কান ধরিয়ে উঠ-বস করানো হয়। পরে জীবননাশের হুমকি দিয়ে তাদের শিখিয়ে দেওয়া কথা বলতে বাধ্য করে এবং তা মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখেন তারা। এ সময় আমাকে ইমনের স্ত্রী মনিরা আক্তারের পা ধরতেও বাধ্য করেন তারা।”

এ বিষয়ে ইমতিয়াজ ইমনকে ফোন করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে সোমবার ইমন সাংবাদিকদের বলেন, “সজলের চরিত্র ভাল না। তিনি জমজম নার্সিং কলেজে থাকাকালে মেয়েদের কুপ্রস্তাব দিতেন। আমি এর প্রতিবাদ করায় আমার স্ত্রীকে পরীক্ষায় অকৃতকার্য করিয়ে দেন। তিনি যেন ভবিষ্যতে আর কোনো নারীকে অবৈধ প্রস্তাব না দেন, এই মর্মে মুচলেকা রাখতে গেলে তিনি নিজেই কান ধরেন। তাকে মারধর করা হয়নি। কারা ভিডিও ছড়িয়েছে এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।”