বরিশাল মিডিয়ায় বিভক্তির যুদ্ধে পদদলিত মাঠপর্যায়ের সংবাদকর্মী, রক্ষকশূন্য রাজপথ

শেয়ার করুনঃ

এস এম জাহিদ :: বরিশালের মিডিয়া এখন বিভক্তির যুদ্ধে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে। বড় থেকে ছোট সকল প্লাটফর্মেই চলছে যুদ্ধ। আর এই বিচ্ছিন্ন যুদ্ধে পদদলিত হচ্ছে মাঠপর্যায়ের সংবাদকর্মীরা। সাংবাদিক নেতারা সংবাদকর্মীদেরকে নিজেদের ঢাল-তলোয়ার হিসাবে ব্যবহার করলেও তাদের বিপদের দিনে বিভক্তির দোহাই দিয়ে নিজেদের গুটিয়ে নিচ্ছেন।

চলে যাই বছর খানেক আগের প্রসঙ্গে বরিশাল মিডিয়ায় তখনও ছিলো শান্তির হাওয়া। যেখানেই কোন সংবাদকর্মী বিপদে পড়েছে সবার আগেই ঝাপিয়ে পড়তে দেখা যেতো বরিশালের বার্তা সম্পাদকদের সংগঠন “নিউজ এডিটরস কাউন্সিল বরিশাল’কে। হাসিবুল ইসলাম, সৈয়দ মেহেদী হাসান, খন্দকার রাকিব, রিপন হাওলাদার, আরেফিন তুষার, মশিউর মন্টু, আরিফ হোসেন,এম কে রানা, ফাহিম ফিরোজদের দেখা যেতো ব্যানার হাতে বরিশালের প্রানকেন্দ্র টাউন হলের সামনে। মাইক হাতে প্রতিবাদি কন্ঠে নির্যাতিত সাংবাদিকদের মুক্তির জন্য একের পর এক কর্মসূচি ঘোষণা করতে। কিন্তু আজ সময়ের স্রোতে ষড়যন্ত্রের বেড়াজালে হারিয়ে গেছেন। আজ তাদের হাতে নেই মাইক, নেই কোন ব্যানার ফেস্টুন। হারিয়ে যাওয়ার কাহিনী বরিশালের সকলেরই কম বেশি জানা থাকলেও প্রকাশ করতে রাজি নন কেউ।

চোখ রাখলেই দেখা যায়- হেভিওয়েট নেতারা দিশেহারা হয়ে শুরু করেন গভীর ষড়যন্ত্র। বিভক্তির তীর নিক্ষেপ করে ধ্বংস করে দেন নিপীড়িত সংবাদকর্মীদের আশার প্রদীপ “নিউজ এডিটর কাউন্সিল, বরিশাল। জন্ম নেয় পাল্টা আরেকটি সংগঠনের। সাংবাদিক নেতাদের তীরের আঘাতে শক্তিশালী বার্তা সম্পাদক নেতারা ২ টি দূর্বল নিন্মচাপে পরিনত হয়। বিভক্ত হয়ে যায় দুই দলে। নিজেদের রক্ষায় সংবাদকর্মীদের পাশে টানতে শুরু করেন দুই পক্ষের সাংবাদিক নেতারা। যার পরিনতি আজ সংবাদকর্মীদের নামে থানায় ডজনে ডজনে এজাহার। যা থেকে বাদ যায়নি কেউ। ছোট থেকে বড়, তরুন থেকে বৃদ্ধ সকল সংবাদকর্মীরাই আজ কম বেশি মিথ্যা মামলায় জর্জরিত। ষড়যন্ত্রের ফলশ্রুতি স্বরূপ সংবাদকর্মীদের সরকারি অফিস কক্ষে আটকে নির্যাতনের পরে তাদের নামে থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের হয়। কাউকে আবার দেয়া হচ্ছে মেরে ফেলার হুমকি।

সেদিন বরিশালে বিএডিসি কার্যালয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েও মিথ্যা ষড়যন্ত্রমূলক মামলার ঘানি মাথায় নিয়ে নিরবে এ সকল নিপীড়ন মুখ বুঝে সহ্য করে যাচ্ছে সংবাদকর্মীরা। বরিশাল আব্দুর রব সেরনিয়াবাত প্রেসক্লাব,নিউজ এডিটর কাউন্সিল বরিশাল, বরিশাল নিউজ এডিটর কাউন্সিল, সাংবাদিক ইউনিয়ন, বরিশাল মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাব, বরিশাল তরুন সাংবাদিক ঐক্য পরিষদেসহ ডজন খানেক সংগঠন থাকলেও টাউন হলের সামনে মানববন্ধনে দাড়ানোর সাহস হয়না কারোরই। কারণ এর পিছনেও লুকিয়ে রয়েছে ‘বিভক্তি’ কেন্দ্রীক রাজনীতি। সেদিন বিএডিসি কার্যালয়ে সরকারি কর্মকর্তাকে নির্যাতনের ঘটনায় হওয়া মামলায় আসামি সাংবাদিক মিজান পলাশ, রিশাদ, মুরাদ, রানা, আব্বাস ষড়যন্ত্রের শিকার। কারণ মামালার এজাহারও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমেই তৈরী। ওই মামলার বাদীর কল রেকর্ড ইতিমধ্যে এক সংবাদকর্মীর মুঠোফোনে রেকর্ড করা হয়েছে। উক্ত কথোপকথনে তিনি জানান, কোন সাংবাদিক নেতার হুকুমে এই মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে সংবাদকর্মীদের। মুল আসামীদের বাদ দিয়ে তাদের পরিবর্তে এজাহারে নিরীহদের নাম দিতে কিছুটা বাধ্য হয়েছিলেন তিনি।

‘বিভক্তির বেড়াজাল ডিঙিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নির্যাতিত সাংবাদিকদের পাশে দাড়াতে সকল সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য আহবান জানিয়েছেন বরিশালের মাঠ পর্যায়ের সংবাদকর্মীরা।