পটুয়াখালীতে গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ শেষে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট

শেয়ার করুনঃ

পটুয়াখালী প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় ৩০ বছর বয়সী এক গৃহবধূকে হাত-পা বেঁধে ধর্ষণ শেষে টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করা হয়। শুক্রবার রাতে উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরমার্গারেট এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহে শাকিল (২০) নামের এক তরুণকে শনিবার সকালে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চরমোন্তাজ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। শাকিল চরমার্গারেটের বাসিন্দা মজিবর শরিফের ছেলে। সে পেশায় টেইলার্স (দর্জি)।

নির্যাতনের শিকার গৃহবধূকে রাতেই স্পিডবোটযোগে গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আজ সকালে তাকে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শনিবার সকালে ওই গৃহবধূকে ভর্তি করা হয়। তিনি অসুস্থ। তার মেডিকেল টেস্ট করা হয়েছে।

গৃহবধূর স্বামী সাংবাদিকদের বলেন, আসরের আগে তিনি কাশেম মোল্লার স্লুইসে (পার্শ্ববর্তী এলাকা) গিয়েছিলেন। তিনি যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন রাত ৯টা কিংবা পৌনে ৯টা। পথিমধ্যে তার মোবাইলে বাড়ি থেকে ফোন আসে। পরে ফোনটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। তার কাছে বিষয়টি সন্দেহের হলে তিনি দ্রুত বাড়িতে ছুঁটে যান। গিয়ে ছেলে-মেয়ের কান্নার শব্দ শুনে ঘরে ঢোকেন।

সে সময় বাতি বন্ধ ছিল জানিয়ে তিনি আরও বলেন, টর্চ লাইট মেরে দেখেন তার স্ত্রী টেবিলের সঙ্গে হাত বাঁধা। নাক-মুখ ও চোখ ওড়না দিয়ে বাঁধা। পরে ডাক-চিৎকারে লোকজন আসে। এর মধ্যে তার স্ত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। রোগী অনেক অসুস্থ থাকায় দ্রুত তাকে গলাচিপা নিয়ে যান তিনি। পরে সেখান থেকে পটুয়াখালী নেওয়া হয়।

গৃহবধূর স্বামী দাবি, তার স্ত্রীকে শারীরিক নির্যাতন এবং ধর্ষণ করা হয়। পরে ঘর থেকে দেড় লক্ষাধিক টাকা এবং স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় তিনজন জড়িত আছেন বলে দাবি করেন তিনি।

প্রতিবেশীরা জানান, ভিকটিম মুমূর্ষু অবস্থায় ছিল। পরনের পোশাক এলেমেলো ছিল। ভিকটিমের তথ্যমতে, যে তিনজন এসেছিল তাদের গায়ে বোরকা ছিল। স্থানীয়রা জানায়, ওই গৃহবধূর বাড়ি নির্জন জায়গায়।

রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলী আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভিকটিমের যারা আত্মীয়-স্বজন তারা কেউ এলাকায় নেই। তারা পটুয়াখালী গেছে। গলাচিপা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলছি। তিনি বলছেন, একজন রোগী আসছিল। রোগীর বক্তব্য অনুযায়ী তাকে মারছে (মারধর) এবং ধর্ষণ করেছে। আমরা তাকে পটুয়াখালী পাঠিয়ে দিয়েছি। ধর্ষণ কিনা তা বলতে পারছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত ঘটনা জানতে আমি ঘটনাস্থলে এসেছি, সার্কেল স্যার আসতেছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।’ উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার বলেন, ‘অত্যন্ত দুঃখজন বিষয়। আমি ঘটনাস্থলে যাব।’

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিষয়টি জেনেই আমি ভিকটিমের স্বামীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি ঘটনায় জড়িত তিনজনের নাম বলেছেন। তাৎক্ষণিক ওসি সাহেব এবং চরমোন্তাজ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। শাকিল নামের একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ধরা হয়েছে। বিষয়টি আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখব।’