রাজাকারের স্ত্রী পেলেন দুর্যোগ সহনীয় ঘর

শেয়ার করুনঃ

অনলাইন ডেস্ক :: বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজলার গোবিন্দপুর ইউনিয়নের খিহালী চকপাড়া গ্রামের চিহ্নিত রাজাকার খোরশেদ আলী ফকির খুদুর স্ত্রী মলিনা বেওয়া সরকারের দেয়া দুর্যোগ সহনীয় ঘর পেয়েছেন। এতে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের মানুষদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ ঘটনায় আবদুস সালাম নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদনও করেছেন।

গোবিন্দপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার ও প্রকল্প সভাপতি বেলাল হোসেনের দাবি, খোরশেদ আলী ফকির খুদু চিহ্নিত রাজাকার ছিলেন। যুদ্ধ শেষে মুক্তিযোদ্ধারা তাকে হত্যা করেন। সেই রাজাকারের স্ত্রী মলিনা বেওয়াকে সরকারি বাড়ি দেয়ার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়। এছাড়াও ওই রাজাকারের পরিবার স্বাবলম্বী এবং এখনও তাদের মাঠে চার বিঘা জমি ও বাড়িতে এক বিঘার মতো জায়গা রয়েছে।

এ কারণে তিনি প্রায় এক মাস এতে স্বাক্ষর করেননি। পরবর্তীতে প্রশাসনের লোকজন ও তার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম হেলালের চাপে স্বাক্ষর দিতে বাধ্য হয়েছেন।

এদিকে একই গ্রামের বাসিন্দা অভিযোগকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম বলেন, আমাদের গ্রামে অনেক হতদরিদ্র রয়েছেন। অথচ রাজাকার খোরশেদ আলী ফকির খুদুর স্ত্রী মলিনা বেওয়াকে সরকারিভাবে ঘর দেয়া হয়েছে। এতে আমিসহ মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের লোকজন দুঃখ পেয়েছেন এবং তারা ক্ষুব্ধ। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, রাজাকার খোরশেদ আলী ফকির খুদুর পরিবার স্বাবলম্বী। তারা সম্পত্তির তথ্য গোপন এবং বড় তদবিরের মাধ্যমে সরকারি বাড়ি পেয়েছেন। বর্তমানে ওই বাড়ি আড়াল করতে ইট দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে।

গোবিন্দপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম হেলাল মনোয়ার জানান, তার জন্ম স্বাধীনতার পর। তাই খুদু রাজাকার ছিলেন কি-না তা তার জানা নেই। এছাড়াও এ তালিকা তিনি করেননি এবং তালিকা করতে কাউকে চাপও দেননি।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আশরাফুল আরেফিন জানান, গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে এ উপজেলায় ১৮টি দুর্যোগ সহনীয় ঘর দেয়া হয়েছে। মলিনা বেওয়ার স্বামী ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা বিরোধী ছিলেন কি-না তা জানা নেই। তার পরিবার দরিদ্র হিসেবে আবেদন করায় ঘর দেয়া হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম জাকির হোসেন জানান, মলিনা বেওয়ার স্বামীর ব্যাপারে তার কিছু জানা নেই। বর্তমান অবস্থা দেখে দরিদ্র হিসেবে তাকে ঘর দেয়া হয়েছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আজাহার আলী মন্ডল জানান, রাজাকারের স্বাবলম্বী পরিবার সরকারি ঘর পেতে পারে না। এ ঘটনায় তিনি লিখিত অভিযোগ পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।