সাংবাদিকরা একটা ভয়ের মধ্যে বাস করছেন: মেনন

শেয়ার করুনঃ

অনলাইন ডেস্ক ::: সাংবাদিকরা একটা ভয়ের মধ্যে বাস করছেন বলে জানান ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। বুধবার (১ জুন) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়ার ৫৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন বলেন, সাংবাদিকরা ভয়ের মধ্যে কেন বাস করছেন তারাও জানেন, আমরাও জানি। ভয় আগেও ছিল। এখন কেন জানি মনে হচ্ছে সীমা ছাড়িয়ে গেছে। একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

ভয়ের অনেকগুলো কারণ আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাংবাদিকরা লড়াই করে যাচ্ছেন। প্রথমে লড়াই করেছেন ১৯৬২ সালে। ষাটের দশকের কালাকানুনের বিরুদ্ধে লড়াই করে বিজয়ী হয়েছেন সাংবাদিকরা। সামরিক শাসন যুগ নব্বই দশকের অভ্যুত্থানের পরে এদেশের সাংবাদিকতা জগতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছিল। একটা স্বাধীন সাংবাদিকতার পথ খুঁজে পেয়েছিলাম। আমরা সেটাকে ব্যবহার করেছি না অপব্যবহার করেছি।

ডিজিটাল আইনের কথা উল্লেখ করে রাশেদ খান মেনন বলেন, আইনমন্ত্রী বলেছেন ডিজিটাল আইনে এখন আর সাংবাদিকদের গ্রেফতার করা হবে না। ওই আইনে সাংবাদিককে সংবাদের জন্য গ্রেফতার না করে অন্য ঘটনায় গ্রেফতার করা হলে তখন কী হবে? এখন আবার এসেছে গণমাধ্যম কর্মী আইন। এসব আইন নিয়ে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের নিয়ে যে ধরনের কথা আশা করেছিলাম, তা পাইনি।

মেনন বলেন, মানিক মিয়া বামপন্থীদের লাল মিয়া বলতেন। তার পত্রিকায় বেশিরভাগই ছিলেন বামপন্থী। তিনি লেখায় কোনো হস্তক্ষেপ করতেন না। এদেশের অনেক বড় বড় সাংবাদিক তার হাত দিয়ে তৈরি হয়েছে। সাংবাদিকতার উৎকর্ষতা, সম্পাদনে উৎকর্ষতা মানিক মিয়া তার পত্রিকার মাধ্যমে, লেখনীর মাধ্যমে করে গেছেন।

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, লেখনী দিয়ে বঙ্গবন্ধুকে সবার সামনে এনেছিলেন মানিক মিয়া। তাকে শুধু সাংবাদিক হিসেবে শ্রদ্ধা জানাই তা নয়, বরং স্বাধীনতার অন্যতম সহযোগী হিসেবে শ্রদ্ধা জানাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা পেশাগত কোনো কারণে বিভক্ত হইনি, আমরা রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত হয়েছি। ১৯৯০ এর পর ক্ষমতাসীনরা সাংবাদিকদের বিভক্ত করেছে। অনেকে বলেন, সাংবাদিক হিসেবে আপনারা নিরপেক্ষ হন। কিন্তু সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে আমরা অবশ্যই নিরপেক্ষ হবো। তবে যখন দেশের সার্বভৌমত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আঘাত আসবে, সাম্প্রদায়িকতা ছড়িয়ে পড়বে তখন কিন্তু চুপ থাকার সুযোগ নেই।

সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাংবাদিকদের রাজনৈতিক দর্শন থাকতেই পারে। এখন দেখার বিষয় হলো আমরা সেটাকে পেশার মধ্যে মিলিয়ে ফেলছি কিনা। দুঃখজনক হলো আমাদের রাজনীতিতেও যেমন ধস নেমেছে, সাংবাদিকতায়ও তেমন ধস নেমেছে।

প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, সাংবাদিকতার প্রবাদ পুরুষ বললে যে নামটি আসে সেটি হলো তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া। স্বাধীনতার যে আন্দোলন, সেখানে জনমত গঠন করেছিলেন মানিক মিয়া। রাজনৈতিক নেতা না হয়েও তিনি জেল খেটেছেন। বঙ্গবন্ধু যখনই বড় কোনো কাজ করতেন, মানিক মিয়ার সঙ্গে পরামর্শ করতেন।