লেবাননে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত ৭৮, আহত হাজারো

শেয়ার করুনঃ

অনলাইন ডেস্ক :: লেবাননের রাজধানী বৈরুতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে কমপক্ষে ৭৮ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহত চার সহস্রাধিক। আজ বুধবার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

গতকাল মঙ্গলবার বৈরুতের বন্দর এলাকায় প্রচণ্ড বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের শব্দতরঙ্গের আঘাতে পুরো বৈরুত কেঁপে ওঠে। রাজধানীর বড় একটি অংশে বিভিন্ন ভবনের জানালা-দরজার কাচ ভেঙে গেছে। অনেক ভবনের ব্যালকনি ধসে পড়েছে।

বিস্ফোরণে হতাহত হওয়ার ঘটনায় লেবানন আজ থেকে তিন দিনের জাতীয় শোক পালন করছে।

এ ঘটনায় ঘটনায় অন্তত দুজন বাংলাদেশির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আজ বুধবার দুপুরে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাস একজনের নিহত হওয়ার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।

লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাসের দূতালয়প্রধান আবদুল্লাহ আল মামুন আজ বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘এখন পর্যন্ত এক বাংলাদেশির মৃত্যুর বিষয়ে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। তিনি বৈরুতে একটি স্প্যানিশ প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। লেবাননে বসবাসরত বাংলাদেশিদের মধ্যে আরও কেউ হতাহত হয়েছে কি না, এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চলছে।’

লেবাননে বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, বৈরুতের গতকালের বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বাড়তে পারে। প্রবাসীদের কাছ থেকে দূতাবাস তিনজনের বিষয়ে জেনেছ। তবে হাসপাতালে গিয়ে একজনের মরদেহ দেখে তা শনাক্ত করা গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাবু সাহা ২৫ ধরে লেবাননে কাজ করছেন। আজ দুপুরে বাবু সাহা প্রথম আলোকে বলেন, মাউন্ট লেবাননে রয়েছে নিহত মেহেদী হাসানের মরদেহ। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাদেশ্বরা গ্রামের মেহেদী বৈরুতের আশরাফি এলাকার একটি সুপার মার্কেটে কাজ করতেন। এ ছাড়া জিমাইজি এলাকার কর্মরত মিজান নামের অন্য এক বাংলাদেশি মারা গেছেন। শরিয়তপুর নিবাসী মিজান বিস্ফোরণস্থলের প্রায় এক কিলোমিটার কাছের এক রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন।

বাবু সাহা জানান, এ পর্যন্ত ২৫ থেকে ৩০ জন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন বলে শোনা যাচ্ছে। দূতাবাসকে হতাহত হওয়ার ব্যাপারে প্রবাসীরা তথ্য জানাচ্ছেন। দূতাবাসও চিকিৎসা সহায়তাসহ নানাভাবে প্রবাসীদের সহায়তা করছে। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হতাহত মানুষের সংখ্যা বাড়বে। কারণ বিস্ফোরণের সময় প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিজেদের কাজে ব্যস্ত ছিলেন।

বিস্ফোরণের সময়ের বর্ণনা দিতে গিয়ে বাবু সাহা বলেন, ‘মঙ্গলবার বিস্ফোরণের সময়টাতে বাসার পাশের পার্কিংয়ে বসে ছিলাম। হঠাৎ ভূমিকম্পের মতো কিছু একটা ঘটেছে বলে মনে হলো। উঠে বসার পর লক্ষ করলাম, আমার পেছনের ১৩ তলা ভবনটি দুলছে। সামনের ১৭ তলা ভবনও দুলছে। মাটিতে দাঁড়ানোর পর মনে হলো ভূমিকম্প শুরু হয়েছে। আমি কোন দিকে যাব, ভেবে পাচ্ছিলাম না। কারণ, ভবন হেলে তো আমার ওপরই পড়বে। হঠাৎ দেখলাম, ভবনের কাচ ভেঙে পড়ছে। এটা দেখে দাঁড়িয়ে থাকলাম। মিনিট দশেক পর আকাশে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখতে পেলাম।’