আমতলীতে চাঁদা তুলতে বাঁধা দেয়ায় আ.লীগ নেতাকে মারধর

শেয়ার করুনঃ

আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি:: বরগুনা আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিবাড়ী গ্রামের তরমুজের গাড়ীতে চাঁদা তুলতে বাঁধা দেয়ায় ওয়াদুদ মৃধা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান চৌকিদার ও তার ভাই রেজাউল করিম কুদ্দুস মৃধাকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

আহত আওয়ামীলীগ নেতা ও তার ভাইকে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা করতে গেলে ইউনিয়নপরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনির বাঁধার কারনে মামলা করতে পারেনি বলে অভিযোগ করেছেন আওয়ামীলীগ নেতা মজিবুর রহমান চৌকিদার। মামলা করলে ইউপি চেয়ারম্যান তাকে এলাকা ছাড়ার হুমকি দিয়েছে বলে আরো অভিযোগ করেন মজিবুর।

জানা গেছে, উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালীবাড়ী স্লুইজ সংলগ্ন স্থানিয় ওয়াদুদ মৃধা, বাবুল ফকির, কালাম, হৃদয় ও পারভেজসহ ৫/৭ স্থানীয় সন্ত্রাসী তরমুজের গাড়ীতে দীর্ঘদিন ধওে চাঁদা তুলে আসছে। তাদের এমন কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ তরমুজ ব্যবসায়ীরা। গত শনিবার রাতে তরমুজের গাড়ীতে চাঁদা তুলতে বাঁধা দেয় স্থানীয় ৯ নংওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান চৌকিদার। এতে সন্ত্রাসীরা তার উপর ক্ষিপ্তহয়। সোমবার সন্ধ্যারাতে সন্ত্রাসী ওয়াদুদ মৃধার নেতৃত্বে ১০/১২ জনসন্ত্রাসী মোটরসাইকেলে কালীবাড়ী গ্রামে এসে আওয়ামীলীগ নেতা মজিবুর রহমান চৌকিদারকে মারধর করতেছিল। এতে বাঁধা দেয় আওয়ামীলীগ নেতার ভাই মোঃ রেজাউল করিম কুদ্দুস। পরে সন্ত্রাসীরা দুই ভাইকে মারধর করে। তাদের ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে সন্ত্রাসীরা তাদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল রেখে পালিয়ে যায়। তাৎক্ষনিক স্থানীয়রা দুই ভাইকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। ওই হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেয়া হয়। খবর পেয়ে আমতলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে স্থানীয় গ্রামপুলিশ মোঃ নয়া মিয়ার কাছে জিম্মায় রেখে আসেন।

এ ঘটনায় মজিবুর রহমান চৌকিদার আমতলী থানায় মামলা করতে গেলে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনি তাকে মামলা করতে দেয়নি। উল্টো মামলা করলে এলাকা ছাড়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ করেন আহত আওয়ামীলীগ নেতা মজিবুর রহমান চৌকিদার।

অভিযোগ রয়েছে- ইউপি চেয়ারম্যান এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনির পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসী ওয়াদুদ মৃধা, বাবুল ফকির, কালাম, হৃদয় ও পারভেজ এলাকার চাঁদাবাজি ও মাদক কারবারসহ নানাবিদ অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী নেছারউদ্দিন, জাহাঙ্গীর হাওলাদার ও মাহবুব কাজী বলেন, মোটরসাইকেলে ১০/১২ জন সন্ত্রাসী এসে মজিবুর রহমান চৌকিদারকে মারধর শুরু করে। তাকে রক্ষায় তার ভাই মোঃ রেজাউল করিম এগিয়ে আসলে তাকেও মারধর করেছে। পরে স্থানীয় লোকজনএগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা একটি মোটরসাইকেল ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

আহত গুলিশাখালী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মোঃ মজিবুর রহমান চৌকিদার বলেন, তরমুজের গাড়ীতে চাঁদা তুলতে বাঁধা দেয়ায় চেয়ারম্যানের পালিত সন্ত্রাসী ওয়াদুদ মৃধা, বাবুলফকির, কালাম, হৃদয় ও পারভেজসহ ৫-৭ জন আমাকে মারধর করেছে। আমি থানায় মামলা করতে গেলে চেয়ারম্যান আমাকে মামলা করতে দেয়নি।

তিনি আরো বলেন, মামলা করলে চেয়ারম্যান আমাকে এলাকা ছাড়ায় হুমকি দিচ্ছে।

গ্রামপুলিশ মোঃ নয়া মিয়া বলেন, থানা থেকে পুলিশএসেএকটি মোটর সাইকেল জব্দকওে আমার হেফাজতে রেখে গেছেন।


আমতলী থানার এসআই মোঃ আশরাফুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল জব্দ করে গ্রামপুলিশ নয়া মিয়ার হেফাজতে রেখে এসেছি।

গুলিশাখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. এইচ এম মনিরুল ইসলাম মনির মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগকরা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

আমতলী থানার ওসি একে এম মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।