বরগুনা প্রতিনিধি ::: বরগুনার পাথরঘাটায় আনোয়ার হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়ে বুধবার (২৬ এপ্রিল) প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার খানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্কুল ব্যবস্থাপনা কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষা সফরের কথা বলে গত ১৩ মার্চ বরিশালের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার। বরিশাল থেকে ফেরার পর ওই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি তার পরিবারকে জানায়। পরে পরিবারের লোকজন মান-সম্মানের কথা ভেবে ওই শিক্ষককে বিয়ের প্রস্তাব দেন। তবে শিক্ষার্থী অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় বিয়েতে অস্বীকৃতি জানান ওই শিক্ষক।
এরপর রোববার (২৩ এপ্রিল) ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে বুধবার ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভায় অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে তার মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ওই ছাত্রীর বাবা বলেন, ‘পঞ্চম শ্রেণি পাস করার পর মেয়েকে আনোয়ার হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করি। নবম শ্রেণিতে ওঠার পর ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার নানা কৌশলে আমার মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক করেন। গত ১৩ মার্চ স্কুলে শিক্ষা সফরের কথা বলে আমার মেয়েকে বরিশালে নিয়ে একটি আবাসিক হোটেলে রাত্রিযাপন করেন। বরিশাল থেকে ফেরার পর মেয়ের শারীরিক অসুস্থতা দেখে তার কাছে জানতে চাইলে সে সব ঘটনা খুলে বলে। পরে মানসম্মান রক্ষায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বারকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি বাল্যবিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। পরে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে বিচার চেয়ে অভিযোগ করেছি।’
পাথরঘাটা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি তরিকুল ইসলাম রেজা বলেন, ‘এ ধরনের জঘন্য কাজ যারা করেন তারা দুষ্ট প্রকৃতির। এদের কারণেই শিক্ষক সমাজের মান ক্ষুণ্ন হয়। ঘটনা যদি সত্য হয় তবে এর তীব্র নিন্দা জানাই।’
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন আকন বলেন, ‘বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার ব্যবস্থাপানা কমিটি ও শিক্ষকদের নিয়ে জরুরি সভা করা হয়েছে। সভায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার খানকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, ওই ছাত্রী ও তার অভিভাবক আমার কাছে এসে ঘটনা জানিয়েছেন। আইনি পরামর্শের জন্য তাদের থানায় যেতে বলা হয়েছে।
