বরিশাল নগরীতে হঠাৎ বেড়েছে বিল্ডিং নির্মাণের হিরিক

শেয়ার করুনঃ

নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশাল নগরীতে হঠাৎ বেড়েছে বিল্ডিং নির্মাণ কাজ। গত এক দেড়মাস থেকে নির্মাণকাজ চলছে চোখে পড়ার মত। সিটি কর্পোরেশনের ত্রিশটি ওয়ার্ডেই দেখা যাচ্ছে একই চিত্র। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যে যার মত করে করছেন নির্মাণ কাজ। এতেকরে বরিশাল নগরীতে এখন লেবার ও রাজমিস্ত্রির চাহিদা বেড়েছে অনেকগুন। তাই বাড়তি টাকা দিয়েও পাওয়া যাচ্ছেনা লেবার রাজমিস্ত্রি।

কলজে এভিনিউ এলাকার রাজমিস্ত্রির সর্দার ফারুক হাওলাদার বলেন, আগে প্রতিদিন রাজমিস্ত্রিকে দিতাম ৭শ টাকা ও হেল্পারদের দিতাম ৫শ টাকা হাজিরা। আর গত একমাস যাবত নগরীতে এত পরিমাণ নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে এখন রাজমিস্ত্রি, হেল্পার লেবার পাওয়া দুষ্কর হয়ে গেছে। আর গত একমাস যাবত রাজমিস্ত্রিকে দিতে হচ্ছে ৮শ থেকে ৯শ টাকা আর হেল্পারদের ৬ থেকে ৭শ টাকা প্রতিদিনকার হাজিরা। তারপরও মিস্ত্রী সংকট কাটছেনা।

কারন হিসেবে দেখা গেছে- সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ক্ষমতাকালীন সময়ে প্লান নিয়ে রয়েছে নানান জটিলতা ছিল। অনেকে আবার প্লান পাশ করিয়ে রাখলেও বিল্ডিং এর কাজ শুরু করেনি চাঁদা দেয়ার ভয়ে। তাই তারা এখন বিল্ডিং নির্মাণের কাজ করছেন নির্দ্বিধায়।

এছাড়া বর্তমানে প্লান বহির্ভূত ভাবেও চলছে বিল্ডিং নির্মাণ। যার সহযোগীতায় বিসিসির স্টাফরা জড়িত বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে।

নির্বাচনী সময়ের ফাঁকে সিটি কর্পোরেশনের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে যে যার মত নির্মাণ করছেন বিল্ডিং এমনটাই দেখা গেছে সরজমিনে। এমনকি বিল্ডিং নির্মাণের ক্ষেত্রে মানা হচ্ছেনা সেফটি গার্ড। এতে করে পথচারীদের ভোগান্তি চলছে প্রতিনিয়ত, যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। বগুড়া রোড, অক্সফোর্ড মিশন রোড, কাউনিয়া, ভাটিখানাসহ বেশকিছু সড়কে নির্মাণাধীন ভবনে কোনো ধরনের সেফটি গার্ড চোখে পড়েনি।

এ বিষয়ে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাস বলেন, আমাদের প্রতিটি ওয়ার্ডে রোড ইন্সপেক্টর (আড়াই) নিয়োগ করা আছে। বিষয়গুলো তারাই দেখে। তারপরও এখন যেহেতু জানলাম আমি রোড ইন্সপেক্টর (আড়াইদের) সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহন করবো।

তবে সরজমিন সূত্র বলছে, বিসিসির রোড ইন্সপেক্টর (আড়াইদের) সহযোগীতায়ই চলছে নিয়মভঙ্গ করে বিল্ডিং নির্মাণ। এক্ষেত্রে উৎকোচের অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

নগরীর ভাটিখানার বাসিন্দা আফছার মিঞা বলেন, আমি বিল্ডিং নির্মাণের জন্য দুবছর আগে প্লান পাশ করালেও ভবনের কাজ শুরু করিনি। কারন অনেক ভবন মালিককে দেখেছি নির্মাণ কাজ শুরুর পর যেকোনো অজুহাতে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে বিসিসি কর্তৃপক্ষ। এমন ঘটনাও রয়েছে অহরহ যে কাগজপত্র সবকিছু ঠিকঠাক থাকলেও নির্মাণ কাজ শুরুর পর বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। এরপরে মেয়র সাদিকের একান্ত কিছু সহযোগীদের উৎকোচ দিয়ে করতে হয়েছে নির্মাণ কাজ। তাই আমি এতদিন আমার বিল্ডিং নির্মাণের কাজ ভয়েও শুরু করিনি। এখন কোনো ঝামেলা ছাড়াই চলছে আমার বিল্ডিং নির্মাণের কাজ।

একই অভিযোগ করে ২৩নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি পাঁচ শতাংশ জমি ক্রয় করি ২০১৯ সালে এরপর ঐ জমিতে বাউন্ডারি ওয়াল দিতে গেলে ২৩নং ওয়ার্ডের রোড ইনস্পেক্টর (আড়াই) বলে দুই লাখ টাকা ছাড়া জমিতে বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণ করা যাবেনা। তাদের এমন কথা শুনে আমি তখন নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখি। চার বছর পর গত সপ্তাহে আমি আমার জমিতে বাউন্ডারি ওয়াল শুরু করেছি তবে এখনো কেউ কোনো ধরনের বাঁধা দিতে আসেনি।