বরিশালে রিকশাচালক হত্যা: র‌্যারেব অভিযানে ১০ ঘণ্টার মধ্যে দুই আসামি গ্রেপ্তার

শেয়ার করুনঃ

নিজস্ব প্রতিবেদক ::: ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক হাসানের মরদেহ উদ্ধারের ১০ ঘণ্টার মধ্যে দুই ঘাতককে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব-৮) সদস্যরা।

রোববার (১৮ জুন) দুপুরে বরিশাল নগরের রুপাতলীস্থ র‌্যাব-৮ এর সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উপ-পরিচালক মেজর জাহাঙ্গীর আলম।

গ্রেপ্তাররা হলেন- বরিশাল নগরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের চাঁদমারি এলাকার কালু তালুকদারের ছেলে মো. মামুন তালুকদার (৩৬) ও পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চর বিশ্বাস এলাকার সেলিম হাওলাদারের ছেলে মো. রুবেল হাওলাদার (৩৫)। উভয়ের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

র‌্যাব-৮ এর উপ-পরিচালক মেজর জাহাঙ্গীর আলম জানান, ভোলা জেলার তজমুদ্দিন থানাধীন আড়ালিয়া এলাকার হাদি মিয়ার ছেলে মো. হাসান (২২)। জীবিকার তাগিদে পরিবার-পরিজন নিয়ে বরিশাল নগরের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কালাখান বাড়ি এলাকায় বাসা ভাড়া করে বসবাস করতেন।

গত ১৫ জুন রাত ১০ টার দিকে হাসান তার বোনকে জানান, নগরের বাংলাবাজার এলাকা থেকে যাত্রী নিয়ে ভোলা রোডের দিকে যাচ্ছে, ফিরতে দেরি হবে। তবে রাত আড়াইটার মধ্যে তিনি বাড়িতে না ফেরায় হাসানের মোবাইলে ফোন দেন ছোট ভাই সোহাগ। কিন্তু তার মোবাইল তখন বন্ধ পাওয়া যায়। এরপর বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও হাসানের সন্ধান না পাওয়ায় ১৭ জুন সকালে বরিশাল মেট্রোপলিটনের কাউনিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন স্বজনরা।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, শনিবার (১৭ জুন) বিকেল ৩টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার চরআইচা এলাকার ভোলা রোডের পাশের একটি পুকুরে এক যুবকের মরদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা বরিশাল মেট্রোপলিটনের বন্দর থানা পুলিশকে অবহিত করে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অর্ধগলিত মরদেহটি উদ্ধার করলে স্বজনরা সেটি রিকশাচালক হাসানের মরদেহ বলে শনাক্ত করে।

পুলিশ মরদেহটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় আর হাসানের বোন বন্দর থানায় বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।

এর প্রেক্ষিতে তদন্তে নামে র‌্যাব-৮ বরিশালের সদস্যরা। তথ্য-প্রযুক্তি ও বিভিন্ন সূত্র ধরে তদন্ত কার্যক্রম এগুতেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিদের সনাক্ত ও তাদের অবস্থানের তথ্য পায় র‌্যাব। পরে বরিশাল নগরের ত্রিশ গোডাউন এলাকা থেকে মরদেহ শনাক্তের ৮ ও ১০ ঘণ্টার মধ্যে যথাক্রমে মামুন ও রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সেইসঙ্গে নিহতের ছিনতাই হওয়া ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোবাইল ফোন, হত্যার কাজে রশি উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-৮ এর উপ-পরিচালক মেজর জাহাঙ্গীর আলম বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। হাসান সেকেন্ডহ্যান্ড রিকশাটি কেনার পর থেকেই গ্রেপ্তাররা তাকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করেন। ১৫ জুন হাসানকে রিকশাসহ ভোলা রোডে নিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করে ডোবায় ফেলে দেন, আর রিকশাটি নিয়ে তারা পালিয়ে যান।

তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সঙ্গে এ দুজন জড়িত রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে, বাকি বিষয়গুলো পুলিশ তদন্ত করে দেখবে। আর গ্রেপ্তারদের আলামতসহ থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করার কার্যক্রম চলমান বলেও জানান তিনি।